Thursday, December 16, 2010

পোশাক ক্রেতাদের নজর এখন বাংলাদেশে : বায়ারদের চাপে অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে

পোশাক ক্রেতাদের নজর এখন বাংলাদেশে : বায়ারদের চাপে অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে
সৈয়দ মিজানুর রহমান

গত অর্থবছরের প্রথম ৫ মাস জুলাই-নভেম্বরে যেখানে পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি (মাইনাস) ছিল, চলতি বছরের একই সময়ে সেখানে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ৩৫ শতাংশ। যেসব কারখানা গত বছর রপ্তানি আদেশ না থাকায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেগুলোতে এবার কাজের চাপে নতুন অর্ডার নেয়া বন্ধ করেছেন কর্তৃপক্ষ। পোশাক মালিক-শ্রমিকদের ব্যস্তাই শুধু বাড়েনি। রাজধানীর অভিজাত এলাকার বায়িং হাউজগুলোতে দিন-রাত কাজ চলছে। অভিজাত এলাকার হোটে-রেস্টুরেন্টগুলোতে চাপ বেড়েছে বিদেশী ক্রেতাদের ভীড়ে। এসব তথ্য পোশাক রপ্তানিকারকদের।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু তৈরি পোশাকেরই নয়, অন্যান্য পণ্যের রপ্তানির বেলায় একই অবস্থা। গত অক্টোবর থেকেই রপ্তানি খাত ঘুরে দাড়াতে শুরু করে। সংশিস্নষ্টরা মনে করছেন, চলতি অর্থবছর শেষে রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি অন্তত ৩০ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে।

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ'র দেয়া তথ্য মতে, চলতি ২০১০-২০১১ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রপ্তানিতে ইউডি বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। পোশাক খাতে ইউডি বাড়ার অর্থই হলো রপ্তানি আদেশ বাড়ছে। সংগঠনের সভাপতি আবদুল সালাম মুর্শেদী জানান, বিশ্ব বাজারে চাহিদা অস্বাভাবিক বেড়েছে। তবে যেই হারে অর্ডার আসছে, সবগুলো সেভাবে ধরা যাচ্ছে না। কারণ উলেস্নখ করে তিনি বলেন, ঘনঘন বিদ্যুতের লুডশেডিং, চট্টগ্রাম বন্দরের অব্যবস্থাপনা এবং সময়মত প্রণোদণা প্যাকেজ না পেয়ে অনেক উদ্যোক্তা নতুন করে কাজ শুরু করতে পারছেন না। যেসব প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেগুলোর অনেকেই উতপাদন শুরু করেছেন, তবে শতকরা হিসেবে এ সংখ্যা ১৫/২০ ভাগের বেশি হবে না। তিনি জানান, প্রণোদনা প্যাকেজ সময়মত বাস্তবায়ন হলে এখন যেসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ বা ঠিকমত উতপাদন করতে পারছে না, সেগুলো পুরো দমে উতপাদনে থাকত। এতে দেশের জন্যই মঙ্গল হত। তবে নতুন নতুন বাজার তৈরি হচ্ছে বেেলা তিনি জানান।

সূত্র মতে, দেশের সবচেয়ে বড় রফতানি আয়ের খাত তৈরি পোশাকশিল্প। এ শিল্পের বাজার প্রতিনিয়তই বাড়ছে। দেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৭৮শতাংশই আসে এ খাত থেকে। মূলত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি রফতানি হ"েছ। সাড়ে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এ শিল্পটি বাজার সমপ্রসারণের জন্য নানা উদ্যোগ নিলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস অথবা কাউন্সিলিং সেন্টার না থাকায় উদ্যোগগুলো কাজে লাগছে না।

এদিকে পোশাকশিল্পের নতুন বাজার খুঁজতে গিয়ে গত বছর বিজিএমইএ'র একটি প্রতিনিধি দল ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, চিলি, উরুগুয়ে, পতর্ুগালসহ ল্যাটিন আমেরিকার আরো কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করে। এ ভ্রমণের ফলাফল হিসেবে সমপ্রতি শেষ হওয়া বটেঙ্পো মেলায় উপরোক্ত দেশগুলোর ক্রেতাদের অংশগ্রহণ এবং এদেশ থেকে পোশাক ক্রয়ের জন্য স্পট অর্ডারও দিয়েছেন।

এবারের বাটেঙ্পো মেলায় মোট ৬৫ মিলিয়র মার্কিন ডলারের স্পট অর্ডার পেয়েছেন এদেশের পোশাকশিল্পের মালিকরা। পাশাপাশি আরো ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্ডার নিয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তুু অর্ডার পেলেও সেসব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস বা কাউন্সিলিং সেন্টার না থাকায় রফতানি কার্যক্রম দ্রুত করা সম্ভব হচ্ছে না।

যেসব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে সেসব দেশে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা না থাকায় অনেক সময় রফতানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে অনেক সময় লেগে যায়। ফলে বাংলাদেশকে প্রতিবছরই কোন না কোন বায়ার হারাতে হ"েছ। বর্তমানে জাতিসংঘের সদ্যভুক্ত ১৯৩টি দেশের মধ্যে মাত্র ৩৯টি দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস অথবা কাউন্সিলিং সেন্টার রয়েছে।

একদিকে নতুন বাজার সমপ্রসারণের মাধ্যমে এ শিল্পকে যতই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বিজিএমইএ। সরকারের কূটনৈতিক পর্যায়ের জোর লবিংয়ের অভাবে বিশেষ করে আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে দূতাবাস না থাকার কারণে দেশগুলোতে পোশাক রফতানি করতে পারছেন না রফতানিকারকরা। ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশে এদেশের তৈরি পোশাকের পর্যাপ্ত চাহিদা রয়েছে বলেও জানিয়েছে বিজিএমইএ'র একটি সূত্র।

এশিয়ার অনেক দেশে দূতাবাস থাকলেও বাণিজ্যিক পরামর্শক না থাকার কারণে ব্যবসায়ীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারছেন না অনেক ব্যবসায়ী। চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ আরো কয়েকটি দেশেও পোশাক রফতানির অর্ডার পেয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। কিন্তুু দ্রুত ভিসা প্রাপ্তি এবং দূতাবাসগুলোতে বাণিজ্যিক লবিস্ট না থাকার কারণে খুব সহজে রফতানি করতে পারেছেন না পোশাকশিল্প মালিকরা।

এ ব্যাপারে বিজিএমইএ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, নতুন বাজার সমপ্রসারণের মাধ্যমে কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয় করতে পারবে এ দেশ। ফলে দেশের অর্থনীতি আরো মজবুত হবে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনেক আশার কথা শুনিয়েছেন কিন্তুু এখনো কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ আমাদের চোখে পড়েনি।

তিনি আরো বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, চিলিসহ দক্ষিণ আফ্রিকায় বাজার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তুু এ বাজার ধরে রাখার জন্য এবং সমপ্রসারণের জন্য ব্যবসায়ীদের সেদেশগুলোতে যেতে হয়। কিন্তুু আমারা তা পারছি না।

শুধু তৈরি পোশাকই নয়, জানা গেছে, অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্র জানিয়েছে, গত অক্টোবরে রপ্তানি খাতে আয় হয়েছিল ১ হাজার ৬৮৮ দশমিক ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর নভেম্বরে আয় এসেছে ১ হাজার ৫৫৩ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে রপ্তানি খাত আয় কিছুটা কমলেও, গত বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রপ্টস্নানি খাতে মোট আয় হয়েছে ৮ হাজার ২৭৫ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫ দশমিক ৮০ ভাগ বেশি বলে জানিয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরো (ইপিবি)।

জুলাই-নভেম্বর দু'একটি পণ্য ছাড়া রপ্তানি খাতের অধিকাংশ পণ্য রপ্তানিতেই বড় অঙ্কের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৮৮৪ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন ডলারের। এ খাতে গত বছরের তুলনায় আয় বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। নিটওয়্যার খাতে জুলাই-নভেম্বরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ৫৩২ দশমিক ৯৭ মিলিয়ন ডলার। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৬ দশমিক ৯০ শতাংশ।

চামড়া খাতে এ সময়ে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ১০৯ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রবৃদব্দির হার ২৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। হিমায়িত খাদ্যে জুলাই-নভেম্বরে রপ্তানি আয় হয়েছে ২৬৬ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধির হার ৪০ দশমিক ৩০ ভাগ।

তবে রপ্তানি আয় কমে গেছে, ওষুধ খাতে, কাঠ ও কাঠজাতীয় পণ্যে, কসমেটিক্স, রাসায়নিক সার, সিমেন্ট, চা, ফার্নিচার, কাচ ও কাচ সামগ্রী ইত্যাদি পণ্যের। ইপিবি জানিয়েছে, চা খাতে রপ্তানি আয় গত বছরের জুলাই-নভেম্বরের তুলনায় এ বছর একই সময়ে ৭০ শতাংশ কমে গেছে। গত বছর জুলাই-নভেম্বরে আয় হয়েছিল ২ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার। ওষুধ খাতে রপ্তানি আয় কমেছে ২ শতাংশ। জুলাই-নভেম্বরে এ খাতে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ১৭ দশমিক ৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ইপিবি'র দেয়া পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে রপ্তানি আয়ের টার্গেটও ছাড়িয়ে গেছে। এ সময়ে মোট রপ্টস্নানি আয়ের টার্গেট ধরা হয়েছিল ৭ হাজার ১৪২ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। প্রকৃত রপ্তানি আয় হয়েছে ৮ হাজার ২৭৫ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার। টার্গেটের তুলনায় আয় বেড়েছে ১৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

রপ্টস্নানি খাতের সংশি্নষ্টরা মনে করছেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা কেটে যাওয়ায় রপ্তানি খাতের আয় বাড়ছে। এছাড়া বাংলাদেশী পণ্যের বাজারও কিছুটা সমপ্রসারিত হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকার বাইরে এশিয়া ও আফ্রিকার বেশ কিছু দেশে রপ্তানি আয় বাড়ছে।
Source: Daily Ittefaq, 11th December

Some Subject (Many post in one subject):

Monday, November 22, 2010

গার্মেন্ট ও তাঁত শিল্প বিপর্যয়ের মুখে ব্যবসায়ীরা হতাশ

সুতার দাম বাড়ছে: গার্মেন্ট ও তাঁত শিল্প বিপর্যয়ের মুখে ব্যবসায়ীরা হতাশ

লাগামহীনভাবে বাড়ছে সুতার দাম। ফলে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে সুতার বাজার। গত এক সপ্তাহে প্রতি পাউন্ড সুতার দাম এক ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতার দাম বেড়ে যাওয়ায় গার্মেন্টসহ দেশীয় তাঁত শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে। গার্মেন্ট ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারে সুতার কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে স্পিনিং মিল মালিকদের একটি সিন্ডিকেট সুতার বাজার অস্থিতিশীল করে ফায়দা লুটছে। স্পিনিং মিল মালিকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সুতার দাম বৃদ্ধি এবং গ্যাস বিদ্যুতের অসহনীয় সংকটের কারণে মিলগুলোতে উৎপাদন কমে যাওয়ায় সুতার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে দেশের বৃহত্তম সুতার পাইকারি বাজার নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজারে সুতার বেচা-কেনা থমকে আছে। সুতা ব্যবসায়ী, গার্মেন্ট মালিক, ও স্পিনিং মিল মালিকসহ বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি বিসিকের নিউ মদিনা ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ আহসানউলাহ জানান, ঈদের আগে প্রতি পাউন্ড কাট (গার্মেন্টে ব্যবহৃত সুতা ) সুতা তিন দশমিক পঞ্চান্ন সেন্ট দিয়ে ক্রয় করেছিলেন। বর্তমানে সেই সুতা বাজারে বিক্রি হচ্ছে চার দশমিক ত্রিশ সেন্টে। এভাবে প্রতিদিন সকালে-বিকেলে সুতার দাম বাড়ছে। যার কারণে নিট গার্মেন্টগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তিনি জানান, তার গার্মেন্টে এক লাখ ছাবি্বশ হাজার পিসের একটি অর্ডার প্রস্তুত করতে বর্তমানে সুতার দর বৃদ্ধির কারণে দশ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।

বিকেএমইএ'র পরিচালক মনসুর আহমেদ জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতি পাউন্ড সুতা বিক্রি হয়েছে দুই দশমিক পঞ্চাশ সেন্টে। যা বর্তমানে প্রতি পাউন্ডে দুই ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। আকস্মিকভাবে সুতার দর বাড়ানোর জন্য স্পিনিং মিল মালিকদের কারসাজি অবিহিত করে তিনি বলেন, এর ফলে দেশের নিট গার্মেন্ট শিল্পে বিপর্যয় নেমে আসবে। দেশের বেশির ভাগ নিট গার্মেন্ট মালিকের পক্ষেই বর্ধিত মূল্যে সুতা ক্রয় করে শিপমেন্ট করা সম্ভব নয়। অনেক গার্মেন্ট ব্যবসায়ী দেশীয় সুতার দাম বেড়ে যাওয়ার গত এক মাস ধরে ভারত থেকে সুতা আমদানি শুরু করেছেন। বর্তমানে ভারত থেকে কাট সুতা প্রতি পাউন্ড তিন দশমিক পঞ্চাশ সেন্টে আনা যাচ্ছে। মনসুর আহমেদ জানান, ঈদের আগে ছোট ছোট গার্মেন্টগুলো সুতার এলসি বাইরে বিক্রি করে শ্রমিকদের মজুরি প্রদান করেছেন। এ সব নিট গার্মেন্টগুলো এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন।

বিকেএমইএ'র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম জানান, সুতার বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার কারণে বিকেএমইএ ইতোমধ্যে বিটিএমএ'র সঙ্গে সুতার বাজার দর নিয়ে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে যেভাবে সুতার দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই যেসব নিট গার্মেন্ট অর্ডার নিয়েছেন তারা এ মুহূতে শিপমেন্ট করলে পুঁজি হারাতে হবে। বাজারে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও দেশে স্পিনিং মিলগুলো সুতা সরবরাহ করতে পারছে না। বাংলাদেশ ক্লথ মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা জানান, সুতার দর বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশীয় তাঁত শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সরকারিভাবে যদি সুতার বাজার মনিটরিং করা না হয় তাহলে দেশীয় কাপড়ের দাম বেড়ে যাবে। এবং বেশির ভাগ তাঁত শিল্প বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। গতকাল নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের সুতা পট্টি ঘুরে দেখা যায়, বাজারে সুতার ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতার ঘরে সুতা পাওয়া যাচ্ছে না। সিরাজগঞ্জের কাপড় ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদিন জানান, সাধারণত রোজার মধ্যে দেশীয় তাঁত শিল্পে চাহিদার কারণে সুতার দাম কিছুটা বৃদ্ধি পায়। তবে এবার যেভাবে সুতার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে তাঁতিদের পক্ষে সুতা ক্রয় করে কাপড় তৈরি করা সম্ভব হবে না। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সুতার বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলে দেশের নিট গার্মেন্ট এবং তাঁত শিল্পে ধস নেমে আসবে। এ জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

Source: Daily Sangbad


Some Subject (Many post in one subject):

Thursday, August 26, 2010

এ সময়ের পেশা মার্চেন্টাইজিং

এ সময়ের পেশা মার্চেন্টাইজিং
শাম্মি আখতার
আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিৰার্থিরাই ছেলেবেলা থেকে একটি নির্দিষ্ট পেশাকে লৰ্য রেখে পড়ালেখা করে না বা করতে পারে না। তাই শিৰাজীবন শেষে অনেকে বেকারত্বকে বরণ করে হতাশায় নিমজ্জিত হন। ক্যারিয়ার নিয়ে সারাদিন নানা রকমের চিনত্মাভাবনা করেও কোন কুলকিনারা বের করতে পারেন না। কিন্তু শিৰাজীবনে যারা লৰ্য বা এইম ঠিক করতে পারেননি, তাঁরা একটু সচেতন হলেই পাল্টে দিতে পারেন ভবিষ্যত জীবনটাকে। চাকরি নামক সোনার হরিণটাকে করতে পারেন করায়ত। যারা স্থির স্বভাবের, চ্যালেঞ্জ গ্রহণে সৰম, ঝুঁকি নিতে মোটেও ভিত নয়, এমন মানুষদের জন্য চমৎকার পেশা মার্চেন্টাইজিং।

পেশার ধরন
এটি একটি দায়িত্বপূর্ণর্ পেশা। ইংরেজী মার্চেন্ট থেকে মার্চেন্টাইজিং শব্দটি এসেছে। যার অর্থ সওদাগরি। মনে একটু খটকা লাগতে পারে। খোলাসা করে বলা যাক। কাজটা হলো এ ধারকা মাল ও ধার। অর্থাৎ কোন পণ্য ক্রেতার পচ্ছন্দ ও চাহিদার ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুতকারীকে দিয়ে তৈরি করানো। পরবতর্ীতে ক্রেতাদের নিকট বিক্রি করে পর্যাপ্ত মুনাফা অর্জন। তবে এৰেত্রে উলেস্নখ্য যে, আমাদের গার্মেন্টস বা রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পেই এই পেশার চাহিদা ও কর্মসংস্থান সবচেয়ে বেশি। পটভূমি ও বর্তমান পরিস্থিতি আশির দশকের পূর্বে আমাদের দেশে মার্চেন্টাইজিং পেশার কর্মৰেত্র ছিল না। শুধু তাই নয়, এ পেশা সম্পর্কে সাধারণ মানুষ জানত না। তবে আশির দশকের মাঝামাঝি আমাদের পেশে গার্মেন্টস শিল্প স্থাপনের পর থেকে এ পেশার কর্মৰেত্র সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এ পেশার ক্রমন্বয়নও কর্মপরিধী বেড়েছে। বর্তমানে পেশাটি বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য ও সমাদৃত।

কর্মসংস্থানের সুযোগ
বর্তমানে আমাদের দেশের সর্বাধিক কর্মসংস্থানের খাত হলো পোমাক শিল্প। পোশাক শিল্পের উত্তর উত্তর অগ্রগতি হচ্ছে সেই সংগে বাড়ছে এ পেশার অর্থাৎ মার্চেন্টাইজিং পেশার কর্মৰেত্র। গার্মেন্টস ও গার্মেন্টস সংশিস্নষ্ট বায়িং হাউসগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রশিৰত অভিজ্ঞ মার্চেন্টাইজার প্রয়োজন হয়। তাই এ পেশায় কাজ পাওয়ার সুযোগটাও অনেক বেশি। বাংলাদেশ থেকে সারাবিশ্বে তিন ধরনের তৈরি পেশাক রফতানি করে থাকে ওভেন নীট, সোয়েটার। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে চামড়া শিল্প রফতানিমুখী হওয়ায় সেখানেও প্রয়োজন মার্চেন্টাইজার। এছাড়া বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের বিভিন্ন ধরনের ৰুদ্র ও কুটির শিল্প রফতানি হতে শুরম্ন করেছে, সেৰেত্রেও প্রয়োজন মার্চেন্টাইজার। অর্থাৎ আমাদের দেশে মার্চেন্টাইজারের কর্মৰেত্রে রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা।
মার্চেন্টাইজার হতে যা প্রয়োজন
শুরম্নর দিকে মার্চেন্টাইজার নিয়োগ করা হতো এমন লোকদের যারা বাংলা ও ইংরেজী লিখতে পারে। বিশেষ করে ইংরেজীতে নূ্যনতম গার্মেন্টস সম্পর্কে লিখতে পারলেই হতো। কিন্তু পেশাটি আনত্মর্জাতিক ৰেত্রে যথেষ্ট গুরম্নত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে পরবতর্ীতে নিয়ম পরিবর্তিত হয়। বর্তমানে মার্চেন্টাইজার হিসেবে কাজ পেতে হলে অবশ্যই নূ্যনতম স্নাতক পাস হতে হবে। সেই সংগে ইংরেজী ভাষায় দৰ হতে হবে। যেহেতু মার্চেন্টাইজারকে বেশিরভাগ কাজ করতে হয় বিদেশীদের সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কেও ধারণা থাকতে হবে।
প্রয়োজন প্রশিৰণ
মার্চেন্ডাইজারকে কর্মৰেত্রে নানা বিষয়ে খুঁটিনাটি বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করতে হয় যেমন কাপড় কেমন হবে রং কেমন হবে সুতা সেলাই, বোতাম, সাইজসহ সবকিছু তাই প্রশিৰণ থাকাটা জরম্নরী। প্রশিৰণ থাকলে ছোটখাটো সব ধরনের সমস্যার সমাধান নিজেই পৰেই করা সম্ভব।

কোথায় নেবেন
বর্তমানে ঢাকায় বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে মার্চেন্টাইজিং বিষয়ে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিৰণের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বিজেএমইএ (বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফাকচারিং এ্যান্ড এঙ্পোর্ট এ্যাসোসিয়েশন) এ অধীনে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী প্রশিৰণের ব্যবস্থা রয়েছে। মার্চেন্টাইজিং পেশায় যারা ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের জন্য এই প্রশিৰণটি অত্যনত্ম প্রয়োজনীয়। এছাড়া কিছু বায়িং হাউজ ও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের মার্চেন্টাইজিং এ স্বল্প মেয়াদী প্রশিৰণের সুযোগ রয়েছে।

উপার্জন:
অন্য অনেক পেশার তুলনায় মার্চেন্টাইজিং পেশায় উপার্জন বেশ ভাল। ছোট মাঝারি বা বড় গার্মেন্টস বাইং হাউজ ভেদে প্রারাম্ভিক বেতন কম বেশি হলেও, দৰতা অর্জনে সৰম হলে খুব অল্প সময়ে পর্যাপ্ত পারিশ্রমিক পাওয়া সম্ভব। আর যদি আনত্মর্জাতিক মানের বা বহুজাতিক বায়িং হাউস হলে পারিশ্রমিকের পরিমাণ কয়েক লাখ টাকা হতে পারে। এছাড়া অন্যান্য সুবিধা তো রয়েছেই।
বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় পেশার অন্যতম মার্চেন্টাইজিং। আধুনিক ও সময়োপযোগী হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এর রয়েছে গ্রহণযোগ্য। যাঁরা কাজকে ভালবাসেন তাঁদের বিশ্বমানের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে চান তাঁদের পেশা মার্চেন্টাইজিং।

Monday, February 22, 2010

সব গার্মেন্টে ইউডি অটোমেশন সফটওয়্যার চালু হচ্ছে

সব গার্মেন্টে ইউডি অটোমেশন সফটওয়্যার চালু হচ্ছে

গার্মেন্ট কারখানায় ইউডি সফটওয়্যার চালুর মাধ্যমে ব্যয় কমার পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। গার্মেন্টগুলোর জন্য বিজিএমইএতে ইউডি তথ্যের আর্কাইভ তৈরি করা যাবে। প্রয়োজনে সদস্য প্রতিষ্ঠানে সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেবে বিজিএমইএ। শিগগির বিজিএমইএ সদস্য পোশাক কারখানাগুলোতে পূর্ণাঙ্গভাবে ইউডি অটোমেশন সফটওয়্যার চালু করা হবে।
গতকাল তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি কার্যালয়ে এক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বিজিএমইএ সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ দ্বিতীয় সহ-সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, পরিচালক শহীদুল্লাহ আজিম, ইউডি অটোমেশন কমিটির চেয়ারম্যান মিনহাজুল ইসলাম। সভায় জানানো হয়, বিজিএমইএ তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য বিটুবি ওয়েবপোর্টাল চালু করেছে। এতে পোশাক সরবরাহকারী, ক্রেতাসহ ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের জন্য ভার্চুয়াল মার্কেট হিসেবে কাজ করবে। ধারণা করা হচ্ছে এর ফলে পোশাক ক্রেতাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান উপকৃত হবে।
SOURCE: www.techzoom24.com



Some Subject (Many post in one subject):