Wednesday, November 26, 2014

বুড়িগঙ্গা পাড়ে পোশাক বিপ্লব, রোজ বিক্রি ৫০ কোটি টাকা!

বুড়িগঙ্গা পাড়ে পোশাক বিপ্লব, রোজ বিক্রি ৫০ কোটি টাকা!

আগানগর-শুভাঢ্যা (কেরানীগঞ্জ) থেকে ফিরে: রাজধানী ঢাকার দক্ষিণে বুড়িগঙ্গার ওপাড়ে কেরাণীগঞ্জ উপজেলার আগানগর ও শুভাঢ্যা ইউনিয়ন। আগানগরের ঠিক পশ্চিমেই বাংলার জাপানখ্যাত জিনজিরা, মুঘল আমলের স্মৃতিধন্য ভগ্নপ্রায় জিঞ্জিরা প্রাসাদ। এসব স্থানের ঐতিহাসিক পরিচিতি কালের বিবর্তনে চাপা পড়ে গেলেও বিভিন্ন শিল্পের প্রভূত উন্নয়নে এখন জেগে উঠছে আবার।
হাল আমলে ঢাকা জেলার অন্তর্গত কেরাণীগঞ্জ উপজেলার বুড়িগঙ্গা ঘেঁষা আগানগর ও শুভাঢ্যায় গড়ে উঠা ক্ষুদ্র গার্মেন্টসপল্লী ঘিরে তৈরি হয়েছে অপার সম্ভাবনা। স্বাধীনতার পর সীমিত পরিসরে শুরু হওয়া এই গার্মেন্টসপল্লী ধীরে ধীরে ব্যাপকতা পেয়ে বেশ জাঁকিয়ে বসেছে এখন।
বর্তমানে আগানগর-শুভাঢ্যা গার্মেন্টস পল্লীতে ১০ হাজারেরও বেশি ক্ষুদ্র তৈরি পোশাক কারখানা দেশের অভ্যন্তরীণ পোশাকের প্রায় ৬০ ভাগ চাহিদা মেটাচ্ছে। কেরাণীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির তথ্যমতে, এখানে দিনে বিক্রি হচ্ছে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন পোশাক।
মফস্বল শহরগুলোর বিপণিবিতান তো বটেই, রাজধানীর অভিজাত শপিংমলগুলোতেও এখন বিদেশি কাপড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রেতাদের হাতে হ‍াতে উঠছে এখানকার পোশাক। এমনকি রপ্তানি হচ্ছে মালয়েশিয়া, ভারত, বার্মা, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে।
দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এটি অত্যন্ত সুখের খবর হলেও এ ক্ষুদ্র গার্মেন্টসপল্লীর বিকাশে উল্লেখযোগ্য কোন সহযোগিতা নেই সরকারি বা বেসরকারি তরফে। এখানকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা স্ব-প্রচেষ্টায় বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে এগিয়ে নিচ্ছেন সম্ভাবনাময় এই শিল্প।
সম্প্রতি আগানগর-শুভাঢ্যা গার্মেন্টসপল্লী ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
পাঞ্জাবি, শার্ট, ফতোয়া, স্যুট-ব্লেজারসহ সব রকমের শীতবস্ত্র, শিশুদের কাপড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকারের গার্মেন্টস আইটেম পাওয়া গেলেও এই ক্ষুদ্র গার্মেন্টসপল্লী বিশেষভাবে বিখ্যাত জিন্স ও গেভাডিন প্যান্টের জন্য।
চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামিদামি ব্রান্ডের জিন্স ও গেভাডিন প্যান্টের আদলে হুবুহু প্রস্তুতকৃত এখানকার প্যান্ট বিদেশি প্যান্ট হিসেবে দেশের খ্যাতনামা শপিংমলে বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। মফস্বলের বিপণী বিতানগুলোতেও মেলা কদর এর।
এক্সপোর্ট গার্মেন্টের ফেব্রিক্স কিনে আগানগর-শুভাড্যা ক্ষুদ্র গার্মেন্টসপল্লীর কারিগরেরা নিজস্ব আদলে তৈরি করছেন এসব প্যান্ট। এসব ব্যবসায়ীর একটি অংশ আবার বড় তৈরি পোশাক কারখানার আংশিক ত্রুটিযুক্ত কাপড় বা ঝুট সংগ্রহ করে তৈরি করছেন চমৎকার জিন্স প্যান্ট।
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ পল্লীতে প্রায় ৫-৭ লাখ মানুষ সম্পৃক্ত রয়েছে। কাকডকা ভোরেই আগানগরের নাগরমহল রোড ও শুভাঢ্যার বাঘাবাড়ি রোডের ব্যস্ততা বেড়ে যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাপড় কিনতে আসা ব্যবসায়ীদের পদচারণায়। ভাঙ্গাচোরা রাস্তার কারণে প্রতিনিয়তই যানজট লেগেই থাকে। বুড়িগঙ্গার তীর ঘেঁষেও থাকে অসংখ্য নৌকার ভিঁড়। সকাল থেকে রাত অবধি চলে পোশাকের বিকিকিনি। কাপড় কাটা, ওয়াশিং, সেলাইসহ প্রস্তুত প্রণালীর বিভিন্ন কাজে দিনরাত ব্যস্ত থাকেন এ পল্লীর শ্রমিক ও তাদের ক্ষুদ্র মালিকরা। পল্লীর ভেতরের রাস্তাগুলোতে হাঁটলেই যেতে চোখে পড়বে প্যান্ট ও অন্যান্য কাপড়ের বড় বড় বোঝা মাথায় নিয়ে শ্রমিকদের কর্মময় পদচারণা।
প্রাপ্ততথ্য মতে, দেশের বৃহৎ তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর মতো এখানে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা খুব একটা ঘটে না। ক্ষুদ্র পুঁজির ব্যবসায়ীরা সারাক্ষণ কারখানা শ্রমিকদের সঙ্গেই লেগে থাকেন দ্রুত কাজ শেষ করার অভিপ্রায়ে।
আগানগরের নাগরমহল রোডের কলোনি মার্কেটের আমিনুল গার্মেন্টসের মালিক মন্টু শেখ(৫২)।  মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহগঞ্জ থানার খেতেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এর আগে জাপানে কাটিয়ে এসেছেন অনেক দিন। দেশে ফিরে কিছুদিন করেছেন কাঠের ব্যবসা। ২০০০ সাল থেকে আগানগরে এসে শুরু করেন ঝুট কাপড় দিয়ে জিন্স তৈরির ব্যবসা।
মন্টু শেখ বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘সাভার ইপিজেড, গাজীপুর, টংগী, নারায়ণগঞ্জ শিল্পাঞ্চল থেকে জিন্সের ঝুট ফেব্রিক্স স্থানীয় সরবরাহকারীদের কাছ থেকে ৫/৭ হাজার টাকা মণে সংগ্রহ করে সেগুলোকে প্রথমে সাইজ, মান ও কালার অনুযায়ি পৃথক করি। এরপর সেগুলোকে কাটিং করি। তারপর বিদেশি প্যান্টের আদলে কম্পিউটারাইডজ মেশিনে এমব্রয়ডারি করে দক্ষ দর্জি দিয়ে সেলাই করা হয়। সেলাই ও এমব্রয়ডারির পর সেগুলোকে ওয়াশিং মেশিনে কালার কিংবা বিশেষ অংশে ভিন্ন রূপদান করা হয়’’।
তিনি বলেন, ‘‘এবারের ঈদ সামনে রেখে শবে কদরের পর থেকেই ঈদ পোশাক তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। এবারের ঈদে ব্যতিক্রম হলো- ছেলেদের প্যান্টের চেয়ে লেডিস প্যান্টের চাহিদা অনেক বেশি। শিশুদের থেকে বড় সবার জন্যই এই লেডিস প্যান্টের চাহিদা রয়েছে। উপমহাদেশে আগে ভারতেই এই লেডিস প্যান্টের চাহিদা বেশি ছিল। ধীরে ধীরে বাংলাদেশেও এই চাহিদা বেড়েছে।’’
মন্টু শেখ আরও বলেন, ‘‘রমজানের আগে ১৫ হাজার প্যান্টের স্টক ছিল। ঈদ সামনে রেখে আরও ১০ হাজার প্যান্টের প্রোডাকশন চলমান রয়েছে। আমরা সবই পাইকারি বিক্রি করি। আমাদের তৈরি প্যান্ট ১৬০ টাকা থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।’’
বিদ্যুত স্বল্পতা এই ক্ষুদ্র গার্মেন্টসপল্লীর বিকাশে সবচে’ বড় প্রতিবন্ধক হিসেবে উল্লেখ করে আগানগর-শুভাড্যার ক্ষুদ্র গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা জানান, পুরো গার্মেন্টসপল্লীতে ৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৭/৮ মেগাওয়াট। দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ থাকে মাত্র ৩/৪  ঘণ্টা।  এখানকার একজন ব্যবসায়ীকে যদি বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় ৩ হাজার টাকা, তাহলে তাকে জেনারেটর বিল দিতে হয় কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা। জেনারেটরে একটি ফ্যানের জন্য ৬০০ টাকা, লাইট ৬০০ টাকা, সেলাই মোটর ১২শ’ টাকা, আয়রণ মেশিনের জন্য ৫ হাজার টাকা বিল দিতে হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, অনেক সময় কাপড় অর্ধেক ওয়াশ করার পর বিদ্যুত চলে গেলে ওই কাপড়েরর বাকি অংশ ওয়াশ করতে না পারায় রঙ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সেসব কাপড় বিক্রির অযোগ্য হয়ে পড়ে।
শুভাঢ্যার শহীদ দেলোয়ার হোসেন রোডের জেলা পরিষদ মার্কেটের নিউ জিতু গার্মেন্টসের মালিক শেখ জানে আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘আগের বছরগুলোতে বিদেশি কাপড় বিক্রি বেশি হলেও এবার এখানকার কাপড়ের মান ভাল হওয়ায় দেশি কাপড়ের প্রচুর চাহিদা তৈরি হয়েছে। আগানগর-শুভাঢ্যার নাম না বললেও রাজধানীর পলওয়েল, বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সসহ অভিজাত বিপণী বিতানগুলোতে আমাদের তৈরি জিন্স প্যান্টসহ অন্যান্য কাপড় পাওয়া যাবে।’’
তিনি জানান, ‘‘শুধু দেশেই নয়, কোন কোন ব্যবসায়ী মালয়েশিয়া, ভারত, বার্মা, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেও পাঠাচ্ছে আমাদের তৈরি কাপড়।’’
মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার মেদেনীমন্ডল গ্রামের বাসিন্দা জিন্স প্যান্ট তৈরির কারিগর রনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘এখানে যেমন রিজেক্ট মাল দিয়া প্যান্ট বানানো হয়, তেমনি ইনটেক থান দিয়েও প্যান্ট বানানো হয়। আমরা জাপান, চায়না, থাই প্যান্টের সেম্পল দেইখা তাদের মতো করে হুবুহু তৈরি করতে পারি। অনেক সময় বিদেশি প্যান্টের চেয়েও আমাদের ফিনিশিং ভাল হয়।’’
তিনি বলেন, ‘‘একটি লট সম্পূর্ণ করতে প্রায় ১৫-২০ দিন লাগে। এই গার্মেন্টসপল্লীতে এক পিস জিন্সের প্যান্টের কাপড় কাটার জন্য কাটিং মাস্টাররা প্রোডাকশন অনুসারে ৫/৬ টাকা করে পায়। অপারেটরদের বেতন মাসিক ৮/১০ হাজার টাকা, কারিগররা পান একটি প্যান্টের জন্য ৩০-৪০ টাকা আর নারীরা বোতাম লাগানো কাজের জন্য পান ৪-৬ হাজার টাকা।’’
আগানগর-শুভাঢ্যা গার্মেন্টসপল্লীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সংগঠন কেরাণীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতি। সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিলন হোসেন খান এ পল্লীর বিভিন্ন সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন বাংলানিউজের কাছে। একই সঙ্গে সরকারের কাছে সম্ভাবনাময় এই পল্লীর বিকাশে বেশ কিছু দাবি জানান তিনি।
বাংলানিউজকে মিলন হোসেন খান বলেন, ‘‘আমাদের তৈরি কাপড়ের মান দিন দিন ভাল হচ্ছে। তাই বিগত সময়ের চেয়ে চাহিদাও অনেক বেশি। আমাদের গার্মেন্টসপল্লীতে ৪/৫ লাখ শ্রমিক কাজ করে। এখানে মালিক-শ্রমিকের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক থাকায় কোন শ্রমিক অসন্তোষ নেই। আমরা অনেক ঝুঁকি নিয়ে এ ব্যবসা করে দেশের অভ্যন্তরীণ পোশাকের ৬০/৭০ ভাগ চাহিদা মেটাচ্ছি। অনেক সময় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ আমাদের কাছ থেকে মাল নিয়ে গিয়ে উধাও হয়ে যায়। তখন সমস্যায় পড়তে হয়।’’
তিনি বলেন, ‘‘কেরাণীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির নিবন্ধিত ৫ হাজার ব্যবসায়ী রয়েছেন। নিবন্ধন ছাড়াও রয়েছেন আরও ৫ হাজার। বহু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এই ঈদ মৌসুমে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকার পোশাক বিক্রি হচ্ছে এই গার্মেন্টসপল্লীতে।’’
সরকার দেশের রপ্তানিমুখী বৃহৎ গার্মেন্টসের প্রতি বেশি আন্তরিক উল্লেখ করে মিলন হোসেন খান বলেন, ‘‘দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখলেও আমাদের ক্ষুদ্র পোশাক তৈরিকারকদের দিকে সরকার নজর দিচ্ছে না। রপ্তানিমুখী বড় গার্মেন্টসের জন্য বিদেশ থেকে এক্সোসরিজ  আনতে ট্যাক্স ফ্রি সুবিধা থাকলেও আমাদের সে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এ শিল্পের জন্য বিদ্যুৎ-গ্যাসের প্রয়োজন সবচে’ বেশি হলেও আমরা পাচ্ছি প্রয়োজনের তুলনায় খুবই স্বল্প। যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ।’’
এক্সোসরিজ আনতে ট্যাক্স ফ্রি সুবিধা, বিদ্যু‍ৎ-গ্যাস সুবিধা পর্যাপ্তকরণ, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের সহজশর্তে ঋন সুবিধা প্রদান ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা হলে আগানগর-শুভাঢ্যা ক্ষুদ্র গার্মেন্টসপল্লী কেবল দেশেই নয়, গোটা এশিয়ার মধ্যে বিখ্যাত হয়ে উঠতে পারে, এমন আশাবাদ মিলন হোসেন খানের।


Related All Post:




Related Subject (Many post in one subject):

Some Bangladeshi Garments Website:


Friday, November 14, 2014

"বায়িং ব্যবসা" এ দেশে উজ্জ্বল সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে।

"বায়িং ব্যবসা" এ দেশে উজ্জ্বল সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে।

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই পোশাকের চাহিদা অনেক বেশি। আমাদের যে পাঁচটি মৌলিক চাহিদা রয়েছে তার মধ্যে পোশাক রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। খাদ্যের পরেই পোশাকের চাহিদা। এ পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বর্তমানে দেশের প্রধান রপ্তানি আয় হয় পোশাক খাত থেকে। এ সেক্টরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজারো মানুষ। এ পোশাক শিল্পে আবার দুটি ভাগ রয়েছে, একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি অন্যটি বায়িং হাউস। বায়িং হাউসগুলোর কাজ হলো বিদেশি আমদানিকারকদের কাছ থেকে কমিশনের বিনিময়ে অর্ডার এনে তা দেশের ফ্যাক্টরিগুলোতে দেয়া এবং সময়মতো সেই পোশাক আমদানিকারকদের পৌঁছে দেয়া। আমাদের আজকের সাফল্যের গল্পে বায়িং ব্যবসায় সফল হয়েছেন এমন দুজন ব্যক্তি মোক্তার হোসেন জাহাঙ্গীর এমডি; ফ্যাশন এক্সপ্রেস ও মোঃ মমিনুল হক একজিকিউটিভ ডিরেক্টর; ফারইস্ট টেক্সটাইল অ্যান্ড ক্লোদিংয়ের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন সাইফুল ইসলাম শান্ত।

মোক্তার হোসেন জাহাঙ্গীর ক্যাডেট কলেজ থেকে পড়াশোনা করে উচ্চশিক্ষার জন্য ইতালিতে যান। বাবার কন্সট্রাকশন ব্যবসা ছিল তার পরও ১৯৮৩ সালের দিকে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি দেন। কিন্তু উপযুক্ত জনবল ও অভিজ্ঞতা না

থাকার কারণে বন্ধ করে দেন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি। ইতালিতে পড়াশোনার জন্য যাওয়ায় সেখানে পরিচয় হয় স্থানীয় অনেকের সঙ্গে। ইতালিয়ান ভাষাটাও রপ্ত করে নেন খুব সহজে এবং তাদের সংস্কৃতি ধীরে ধীরে রপ্ত করে নেন। এরপর দেশে ফেরা ও ইতালি যাওয়া-আসার মধ্যে থাকেন কিছুদিন। ২০০০ সালে কয়েকজন বন্ধু মিলে একটা বায়িং হাউস প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু পার্টনারদের সঙ্গে ব্যাটে-বলে না মেলায় ২০০৪-এর প্রথম দিকে নিজেই শুরু করেন 'ফ্যাশন এক্সপ্রেস' নামে একটি বায়িং হাউস। বর্তমানে তিনি এ বায়িং হাউসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। তার ব্যবসায়িক পার্টনার স্ত্রী মাটির্না মেনেজেল্লো। যিনি ইতালিয়ান। ২০০০ সালে মোক্তার হোসেন জাহাঙ্গীর বিয়ে করেন মার্টিনাকে। সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে মোক্তার হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, আমার কাছে এ ব্যবসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই হলো "টাইমিং" এবং "ফলোআপ", এ বিষয়টা মেনে চললে এ বায়িং ব্যবসা কখনো মরবে না এবং উন্নতি করতে পারবে খুব সহজে। আমরা যে টাকাটা বিনিয়োগ করবো তার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সময় ও ফলোআপ করা। এর সঙ্গে কমিটমেন্ট থাকলে টাকা এমনিতেই চলে আসবে। আমি মনে করি, মানুষের সঙ্গে কমিটমেন্ট ঠিক রাখলে সে আমার সঙ্গে অবশ্যই থাকবে। এখানে মিথ্যা কথা বলা একেবারেই উচিত নয়। একমাত্র জীবন বাঁচানো ছাড়া মিথ্যা বলা ঠিক নয়। আমি এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হয়েও সারাক্ষন সময় মেইনটেইন করি। এখন আমি যদি চিন্তা করি, আমি তো মালিক একটু দেরি করে অফিসে গেলে তো কোনো সমস্যা হবে না, তাহলে আমার প্রতিষ্ঠান সফল হতে পারবে না। আমাকে আরো বেশি পরিশ্রম করতে হবে এবং সবার কাজের খোঁজখবর নিতে হবে প্রতিদিন। আমার ব্যবসা যেহেতু ইতালিকে কেন্দ্র করে তাই সে দেশে থাকাতে আমার অনেক বেশি সহায়ক হয়েছে ব্যবসার ক্ষেত্রে। আমি সবসময় ইতালিয়ানদের সঙ্গে চলাফেরা করতাম। এর ফলে তাদের দেশের ভাষা আমি খুব সহজে শিখে যাই। এখানে একটি কথা বলে রাখি, ইতালিয়ানরা কিন্তু বেশি ইংরেজি পারে না। তারা তাদের নিজস্ব ভাষা বেশি পছন্দ করে এবং বাইরেও তা প্রয়োগ করে। ফলে আমার সঙ্গে তাদের কমিউনিকেশনটা অনেক ভালো হয়। এতে আমার কাজের অর্ডার পেতে অনেক বেশি সহায়ক হয়। এ জন্য আমি মনে করি, কেউ যদি বিদেশিদের নিয়ে কাজ করতে চায় তাহলে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি শিখে নিলে অনেক বেশি সহায়ক হয় ব্যবসার ক্ষেত্রে। নতুন কেউ যদি এ ব্যবসা শুরু করতে চায় তাহলে আমি বলবো তাকে অবশ্যই কিছু পূর্ব অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে হবে। তাকে অবশ্যই জানতে হবে একটা পোশাকের নেট খরচ কতো পড়বে। আমাদের এ ব্যবসার ভাষায় একে বলে মার্চেন্ডাইজিং। এ মার্চেন্ডাইজিংটা ভালো করে বুঝতে হবে। যদি কেউ মনে করে, আমি তো মার্চেন্ডাইজার রেখে কাজ করবো তাহলে ভুল হবে। নিজে না জানলে অন্যের ভুল ধরা যায় না। এটা জানার জন্য কিছু কোর্স আছে, তা করে নিতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে ইন্টার্নি করতে হবে। এ কোর্সগুলো করা থাকলে একটা পোশাকের সব খরচ বের করা সম্ভব খুব সহজে এবং সে ব্যবসাও ভালো করতে পারবে। আমার কাছে সফলতার মূলমন্ত্র হলো সৎ থাকা। সঙ্গে অর্থ সাপোর্ট থাকলে সফল হওয়া যায় সহজে। এর সঙ্গে কমিটমেন্ট, শ্রম ও ফলোআপ থাকতে হবে। কর্মীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। তাদের ভুল হলে শিখিয়ে দিতে হবে। কারণ ও যদি আমার মতো জানতো তাহলে আমার প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো না। ও নিজেই একটা প্রতিষ্ঠানের মালিক হতে পারতো এটা মনে রাখতে হবে। আমার কাছে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু কর্মীর বিষয়টি চলে এসেছে, আমার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নির্দিষ্ট বেতনের পাশাপাশি বার্ষিক ঈদ বোনাস, মেডিক্যাল চেকআপ, ইনসেন্টিভ, লোন, ছাড়াও আরো কিছু সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়। কারণ আমি মনে করি, একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মীরাই প্রাণ। তারা না থাকলে আমার এ প্রতিষ্ঠান চলতো না। যাদের মাধ্যমে আমি অর্থ আয় করছি, সেখান থেকে কিছু অংশ দিতে তো আমার আপত্তি নেই। এতে তারা আরো উৎসাহ নিয়ে কাজ করে এবং ফলাফল ভালো হয়। যারা বায়িং হাউসে চাকরি করতে চায় তাদের গার্মেন্টস ও বায়িং হাউসের কাজ সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকা উচিত। এর কাজ শুরু করার পর প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিনই শেষ করতে হবে। তাহলে সেই কর্মীকে বায়িংয়ের মালিকরা খুঁজে নিয়ে আসবে। আর একটা বিষয় থাকতে হবে- কাজের সমাধান দেয়ার মতো ক্ষমতা থাকতে হবে। শুধু সমস্যার কথা বললেই হবে না। সমস্যা সমাধান করে তারপর এসে বলতে হবে আমি এভাবে কাজ করেছি এটা ঠিক আছে কি? এভাবে কাজ করলে সে অনেক ভালো করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। আমাদের ভবিষ্যৎ লক্ষ হলো- এ বায়িংয়ের সঙ্গে রিলেটিভ সবকিছু ধীরে ধীরে করবো এবং সেই লক্ষ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের দেশে হোম টেক্সটাইলের অনেক চাহিদা রয়েছে, এটা নিয়ে আমরা ভাবছি। হয়তো সামনে কাজ শুরু করবো। আমাদের দেশের এক উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় সেক্টর এ গার্মেন্ট শিল্প। ভবিষ্যতে আরো অনেক এগিয়ে যাবে এবং হাজারো হাজার মানুষের জীবিকার উৎস হবে। তাই এ শিল্পকে আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে মনে করি। শুধু সরকারি কিছু পদক্ষেপ গার্মেন্টস শিল্পকে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারে। ঠিকমতো বিদ্যুৎ পেলে এবং সুতার সঠিক উৎপাদন হলে এ শিল্প বাংলাদেশকে অনেক এগিয়ে দেবে, এতে আমার কোনো সন্দেহ নেই। ফারইস্ট টেক্সটাইল অ্যান্ড ক্লোদিংয়ের যাত্রা শুরু ২০০৩ সালে। আমার ভাই এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। আমি একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করতাম। যখন দেখলাম মাত্র দুই বছরে এ প্রতিষ্ঠান ভালো একটা স্থানে চলে গেছে তখন আমি চাকরি ছেড়ে দিয়ে এখানে জয়েন্ট করি ২০০৫-এর দিকে। আমাদের নিজস্ব একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিও আছে। আমরা মূলত নিটের কাজ করে থাকি। নিট মানে হলো গেঞ্জি জাতীয় কাপড়। সামনে ওভেন ও সোয়েটারেও যাবো, তার আগে উপযুক্ত একটা টিম তৈরি করতে হবে। আমার কাছে কমিটমেন্ট সাফল্যের অন্যতম একটি শর্ত। যদি কমিটমেন্ট ঠিক না রাখি তাহলে সফল হওয়া যাবে না। আর গার্মেন্ট সেক্টরে টুকটাক কিছু সমস্যা থাকেই, কারণ আমাদের অনেক মানুষের সঙ্গে কাজ করতে হয়। তারপর কর্মীর আসা-যাওয়া তো থাকেই। যদি কেউ বায়িং হাউস দিতে চায় তাহলে তাকে আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে হয়। যেহেতু আমাদের কাজই হলো সম্পর্ক রক্ষা করে কাজ করা তাই এখানে কমিটমেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ। বায়ারদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখা প্রয়োজন এবং ক্যালকুলেশন ঠিক করতে হবে। যদি একটা কাজ করে হাতে কিছু না থাকে তাহলে তো সে ব্যবসা চলবে না। তাই পোশাকের সঠিক খরচ যাচাই করতে জানতে হবে। এগুলোর পাশাপাশি গার্মেন্ট সম্পর্কে তার অনেক বেশি ধারণা থাকতে হবে। এ জন্য বাস্তব অভিজ্ঞতা নিতে হবে। তাহলে সে অবশ্যই ভালো করতে পারবে বলে আমার ধারণা।

আমার কাছে সাফল্যের মূলমন্ত্রই হলো বিশেষ করে এ বায়িং ব্যাপারে, কমিটমেন্ট ঠিক রাখা, সৎ হওয়া, একটা লক্ষ নির্দিষ্ট করা। এগুলো থাকলে সফল হওয়া সম্ভব। আমাদের এখানে নতুনদের কাজে জয়েন করানোর পরপরই ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। তাদের ট্রেনিং দেয়ার পর একজন অভিজ্ঞ কর্মীর সঙ্গে কিছুদিন কাজ করানোর পর তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। আর যারা এ কাজে আগ্রহী তাদের বলবো, শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি বাস্তব কিছু অভিজ্ঞতা খুবই প্রয়োজন এ সেক্টরে। এর জন্য কিছু কোর্স করা যেতে পারে। অথবা কোনো গার্মেন্টস এ ইন্টার্নি করা যেতে পারে। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গার্মেন্টস ফেক্টরি এবং বায়িং অফিস একই সঙ্গে আনা। এবং ভালো একটা টিম গঠন করে অন্য সেক্টরেও কাজ করা ও সাফল্য ধরে রাখা। এ লক্ষ নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রয়োজন যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা : বায়িং হাউসগুলোর যেহেতু গার্মেন্ট ফ্যাক্টরির সঙ্গে কাজ করতে হয় তাই ফ্যাক্টরির কাজের বাধা হলে এর প্রভাব বায়িং হাউসেও পড়ে। ফ্যাক্টরির জন্য সবচেয়ে বড় বাধা বিদ্যুৎ। নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে অনেক ফ্যাক্টরি চললেও কস্টিং অনেক বেড়ে যায়। ফলে দেশের বায়িং এবং ফ্যাক্টরিগুলোর লাভের একটা অংশ চলে যায়। তাই এ পোশাক শিল্পকে ধরে রাখতে হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও সরকারের কিছু সাহায্য পেলেই আরো অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন বায়িং ব্যবসায়ীরা।
লেখকঃ সাজ্জাত হোসেন

Wednesday, November 12, 2014

গার্মেন্টস স্টকলট ব্যবসা : একটি লাভজনক বিনিয়োগ

গার্মেন্টস স্টকলট ব্যবসা : একটি লাভজনক বিনিয়োগ


গার্মেন্টস শিল্পে স্টক-লট হচ্ছে কোন কারনে তৈরি পোশাক ক্রেতার কাছে ঠিক মত পৌঁছে দিতে না পারলে ,গার্মেন্টসে তা স্টক হয়ে যাওয়া ।

গার্মেন্টস শিল্পে বেশ কয়েকটি কারনেই পোষাক স্টক হয়ে যায়। তন্মধ্যে শিপমেন্ট ক্যান্সেল, শিপমেন্ট ডিলে, কন্টিনিউয়াস রি-চেক, এলসি প্রব্লেম অন্যতম। কিছু কিছু বায়ার বিভিন্ন অযুহাতে শিপমেন্ট ক্যান্সেল করে, যাতে সে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কমমূল্যে পন্যগুলো ক্রয় করতে পারে। মূলত কোন পন্য স্টক হয়ে গেলে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দাম কমে যায়। এর এ সুবিধাটা বিভিন্ন মহল ভোগ করে। বর্তমানে বিদেশী বায়াররা স্টকলটের প্রতি খুব বেশি ঝুঁকে পরেছে।
স্টকলট বিভিন্ন সংখ্যার হতে পারে। একে আমরা দুভাগে ভাগ করতে পারি। শর্ট কোয়ান্টিটি স্টকলট এবং লং কোয়ান্টিটি স্টকলট। শর্ট আর লং এর মাঝে পার্থক্য নিশ্চয়ই আর ব্যাখ্যা করতে হবে না।
যাই হোক, আজকাল স্টকলট কোটি টাকার বিজনেস ।

এই খাতে বিনিয়োগ খুব লাভজনক। প্রথমত এই পন্য পঁচে না, যত্ন নিলে নষ্ট হয় না। উপরন্তু এর চাহিদা অত্যাধিক। স্টকগুলোকে আমরা আরো দুটি ভাগে ভাগ করতে পারি। ব্র্যান্ডেড ও নন-ব্র্যান্ডেড। সমগ্র বিশ্বে যে ব্র্যান্ডগুলো সু-পরিচিত সেগুলোকে বলা হয় ব্র্যান্ডেড আর যেগুলো তেমন একটা পরিচিত নয় সেগুলো নন-ব্র্যান্ডেড। ব্র্যান্ডেড স্টকলট ক্রয় করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ আর এতে লাভও বেশি হয়।


বিশ্বব্যাপী সু-পরিচিত ব্র্যান্ডগুলো হচ্ছে :-
Gucci, Barbour, Ralph Lauren, Lacoste,  Nike, Abercrombie & Fitch, Hugo Boss, Louis Vuitton, Holister, Stareon, G Star, Levis, Diesel, Banana Republic, Converse, H&M, Aeexeek & Stareon (A&S), Fred Perry, Tommy Hilfiger, ZARA, American, Eagle, Polo Collection, Superdry, Calvin Klein (CK), Ann Harvey, MAX, Reebok, Prada, Marc Jacobs, Dior, Guess, Fendi, Versace, Valentino, Dolce & Gabbana (D&G), Wonderbra, French Connection, Sloggi, Adidas, Duck and Cover, Firetrap, Henleys, Miss Sixty, Timberland, GAP, Express, Aeropostale, Jack & Jones, Jcrew, Topman, John Hill, Lee, Nautica, Wrangler, Esprit, Vans, Brioni, George, NEXT, Element, Carbrini, AEEXEEK, Balenciaga, Armani Exchange, Miu, Miu, Givenchy, Burberry, Chanel, DKNY (Donna KarenNew York), April Evil, Australia Rivers, Bershka, Admiral,Cherokee, Collezione, Co.Jeans, Crazy 8, Kenvelo, Disney, Esmara, French Cuff, Friends 4 Ever, Golden Dream, Hello Kitty, Infinity, Jeans Club, Jules Collection, Kangaroo
L O G G, MayFair, MEXX, N.Y Tee, Mountain Ridge, NEWYEAR, NiKKi, Okay, Philadelphia, Philip Russel, PIZZA ITALIA, Pull Bear, Pro Game, Regatta, Rodi Mood, S. Oliver, Splash, St. Jhon's, Sylenger, Terranova, Tezenis, Tom Tailor, Topolino, Tuff Guys, U.S.Polo Assn., Urban Beach, US Basic, White Stag, Winbra, X-Tend, Xside, Max Mara, Bisou Bisou, Moschino, Roberto Cavalli, McQ by Alexander McQueen, Vera Wang, Oscar de la Renta, Juicy Couture, Elie Saab, Yves St. Laurent, Rexorize, Hermes, Anna Sui, Blumarine, Bottega Veneta, Chloe, Christian Lacroix, Lanvin, Paris, Max Azria, Salvatore Feragamo, Stella McCartney, Emilio, Pucci, Vivienne Westwood, Nina Ricci, Marios Schwab, CarolinaHerrera, Emanuel Ungaro, Mark and Spencer, Debenhams, House of Fraser, Laura Ashley, FCUK, Forever New, Forever 21, Brooks Brothers, Abercrombie and Fitch, Urban X, Mango, Promod, Aftershock, Sisley, Dsquared, Ed Hardy, Explosion, Lagos, Trussardi, New Look, Boden, Clock House, True Religion, Topshop, Jack Willis, ASOS, Blue Inc, Austin Reed, Dorothy Perkins, Etam, Karen Miller, La Senza,Miss Selfridge, Wallis, Burton, Jigsaw, Oasis, Matalan, Lipsy, London, PUMA, Ted Baker, Primark, Sweaty Betty, RiverIsland



Categories
T-Shirt, Polo Shirt, Sweat Shirt, Basic Shirt, Long Pant, Short Pant, Denim Jeans Pant, Cargo Pants, ChinoPants, Barmuda Pants, Tank Tops, Shorts, Frocks, Sweaters, Jackets, Hats & Caps, Panty, Underwear, Bra, Boxer, Trouser, Pajama, Towel, Sportswear



Genders
Kids, Men, Women, Unisex

Seasons
Spring, Summer, Autumn, Winter

আপনি নতুন হয়ে থাকলে প্রথমে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ দিয়ে আরম্ভ করতে পারেন। এই যেমন: এক লক্ষ টাকা থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার মধ্যে। আপনি শর্ট কোয়ান্টিটির স্টক ক্রয় করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে লং কোয়ান্টিটির পন্যেরও কিছু অংশ ক্রয় করতে পারেন, যদি সেই লট পার্শাল কোয়ান্টিটি সেল সাপোর্ট করে। সবাই ভালো থাকবেন।

Source: http://www.techtunes.com.bd/


Related All Post: 
গার্মেন্টস স্টকলট ব্যবসা : একটি লাভজনক বিনিয়োগ
বঙ্গবাজারে স্টক লটে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আধিপত্য

Tuesday, November 11, 2014

পোশাক শ্রমিকদের বাসস্থান নিশ্চিত করতে ২% সুদে ঋণ পাবেন গার্মেন্টস মালিকরা

পোশাক শ্রমিকদের বাসস্থান নিশ্চিত করতে ২% সুদে ঋণ পাবেন গার্মেন্টস মালিকরা


পোশাক শ্রমিকদের বাসস্থান নিশ্চিত করতে গার্মেন্টস মালিকদের ২ শতাংশ সরল সুদ হারে ঋণ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ জন্য মঙ্গলবার গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান এবং বিজিএমইএ-এর পক্ষে সংগঠনটির সহ-সভাপতি (অর্থ) রিয়াজ বিন মোহাম্মদ।
সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, এ ঋণের গ্যারান্টি হিসেবে বিজিএমইএ-কে রাখা হয়েছে। যদি কোনো কারণে কারখানা মালিকরা ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন তবে তা পরিশোধ করবে বিজিএমইএ।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, এ ঋণ নিয়ে কারখানা মালিকরা যদি শ্রমিকদের বাসস্থান নির্মাণ করে তাহলে প্রায় ২ কোটি মানুষ নিশ্চিত বাসস্থান পাবে। কারণ এ খাতে প্রায় ৪০ লাখ লোক নিয়োজিত রয়েছেন। যাদের ওপর প্রায় ২ কোটি মানুষ নির্ভরশীল।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানসহ বিজিএমইএ'র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Wednesday, April 23, 2014

বঙ্গবাজারে স্টক লটে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আধিপত্য



বঙ্গবাজারে স্টক লটে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আধিপত্য

গার্মেন্টসের শিপমেন্ট বাতিল সামান্য ত্রুটিযুক্ত অর্ডারগুলো স্টক হয়ে গেলে তা দেশের এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী অপেক্ষাকৃত কমদামে কিনে আবারো বিদেশে রপ্তানি করে থাকে। আবার স্টকের যেসব কাপড় রপ্তানি সম্ভব হয় না তা গুলি¯ত্মানের বঙ্গবাজারসহ দেশের বিভিন্ন মার্কেটে চলে যায়। স্টক হয়ে যাওয়ার ফলে কারখানাগুলো যে বিশাল লোকসানের মুখোমুখি হয় তা এসব ব্যবাসায়ীর কারণে রক্ষা পায়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সাউথ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশ এসব স্টক লটের ক্রেতা হলেও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বাংলাদেশের স্টক লটের চাহিদা অনেক। প্রতিদিনই গার্মেন্টস স্টক থেকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা থেকে কাপড়গুলো কিনে তা ভারতসহ অন্যান্য দেশে রপ্তানি করছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা বেশি হওয়ায় দিন দিন তাদের আনোগোনা যেমন বেড়েছে তেমনি ভারতীয় বিশেষ করে বাংলাভাষি ভারতীয় ব্যাবসায়ীরা বঙ্গবাজারসহ আশে পাশের বাজারে দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেছে। তাতে বাংলাদেশি ব্যবসায়িরা খুশি হলেও প্রকৃতপক্ষে তারা বাংলাদেশিদের ব্যবসা নষ্ট করতে শুরু করেছে।
বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ি আব্দুল জলিল বলেন, ভারতীয়রা যে কাপড় আগে আমাদের থেকে ক্রয় করতো এখন তারা সে কাপড় সরাসরি কারখানা থেকে কিনছে। বাংলাদেশের শ্রমিকের ঘামে যে কাপড় তৈরি হচ্ছে সে কাপড়ের লেবেল কেটে তারা মেড ইন ইনডিয়া লিখে অন্যান্য দেশে বিক্রি করছে। আবার বঙ্গবাজারে প্রতিদিনই বিদেশি খুচরা ক্রেতা আসে। ভারতীয়রা কৌশলে সম্পর্ক করে এসব ক্রেতাদের বাংলাদেশিদের থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় স্টক লটের ব্যবসায় পুরো নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন, বর্তমানে বঙ্গবাজার, নগরপ্লাজাসহ আশে পাশের মার্কেটগুলোতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বেশ কিছু দোকান গড়ে উঠেছে। এখন এসব মার্কেটে প্রতিদিনই অনেক ভারতীয় ব্যবসায়ীদের দেখা যায়।
আরিফ আহমেদ নামে বঙ্গবাজারের আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, যে কাপড় আমাদের রপ্তানি করার কথা তা রপ্তানি করছে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। তাদের ব্যবসায় সব ধরণের সহযোগিতা করছে বাংলাদেশের কিছু ব্যবসায়ী। যদি এভাবে স্টক লটের ব্যবসায় ভারতীয়দের অধিপত্য প্রতিষ্ঠা পায় তাহলে এক সময় বাংলাদেশি স্টক লট ব্যবসায়ীরা হারিয়ে যাবে।
বিজিএমইএ পরিচালক সাঈদুল ইসলাম সাদি আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশের স্টক লটের প্রতি ভারতীয়দের আগ্রহের বিষয়টি সবারই জানা আছে। কিন্তু তারা নিজেরাই স্টক লট কিনে তা ভারতের নামে রপ্তানি করছে এধরণের অভিযোগ বিজিএমইএ এখনো পায় নি। ভারতীয়রা ক্রেতা হয়ে আমাদের স্টক লটগুলো কিনে নিতে পারে। এখানকার বিদেশি ক্রেতা ধরতে তারা বাজারে কোনভাবেই প্রতিযোগিতা করতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএ সহ প্রশাসনের এখনই উদ্যোগ নেয়া দরকার।