পোশাক শিল্পে আড়াই হাজার কোটি টাকার স্টক লট জমা
ঢাকা: বিদায়ী বছরে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্ডার বাতিল, ঠিক সময়ে শিপমেন্ট করতে না পারায় বর্তমানে পোশাক কারখানাগুলোতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার স্টক লট জমা হয়েছে। ফলে কারখানাগুলোর অন্যান্য খরচের সঙ্গে যোগ হচ্ছে এই বিশাল লোকসান।
পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গত এক বছরে পোশাক শিল্পেরর ওপর যে ধাক্কা এসেছে সেটা সামাল দিয়ে এ শিল্প টিকে আছে, এটাই বেশি। কারখানাগুলোতে যে হাজার কোটি টাকার স্টক লট জমা হয়েছে তা কোনো না কোনো ক্রেতার অর্ডারেই তৈরি হয়েছিলো। কিন্তু সঠিক সময়ে শিপমেন্ট কারতে না পারা এবং অর্ডার বাতিল হওয়ায় বাইরে পাঠানো সম্ভব হয়নি। যা এখন নাম মাত্র মূল্যে খোলা বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অনেক কারখানা পরবর্তী মৌসুমে বিক্রির জন্য এসব পণ্য স্টক করে রাখছে।ফলে তা রক্ষাণাবেক্ষণ বাবদ বাড়তি খরচ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী।
বিজিএমইএ জানায়, বড় কারখানাগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় এয়ার শিপমেন্ট করে অর্ডার পৌঁছালেও মাঝারি ও ছোট কারখানাগুলো তা করতে পারেনি। ফলে তাদের স্টক লট বেশি হয়েছে। বিশেষ করে সান ম্যান গার্মেন্টস, আর জে এপারেলস, গোল্ডেন হরাইজেন’র মতো অসংখ্য কারখানা মালিকরা স্টক লট খোলা বাজারে বিক্রি করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গার্মেন্টসের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য বলেন, আমার একটি শিপমেন্ট চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার অর্ডার বাতিল হয়েছে।যার পুরো অর্ডারের কাপড়ই এখন স্টক লট হিসেবে গোডাউনে পড়ে আছে।
এ বিষয়ে জামান ফ্যাশনের কর্ণধার ও স্টক লট ব্যবসায়ী তানভীর জামান বাংলানিউজকে বলেন, আগের তুলনায় পোশাক কারখানাগুলোতে স্টক লটের পরিমাণ বেড়েছে। তবে এতে স্টক লট ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন না। কারণ এসব স্টক লটের কিছু বিদেশি ছোট ক্রেতা থাকে।তারাও এখন আসছে না।
তিনি আরও জানান, যেসব পণ্য স্টক লট হলে আগে ২৫ টাকা পিস হিসেবে কিনতে পারতাম এখন সেখানে ব্যয় হচ্ছে ৬০ থেকে ৭৫ টাকা। ফলে আমরাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।
টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা বাংলানিউজকে বলেন, স্টক লট গার্মেন্টসে নানা কারণে হতে পারে। এর আগেও গার্মেন্টস এ স্টক লট হয়েছে। তবে গত এক বছর তা অনেক বেড়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক অস্থিরতার পরও ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে নিটওয়ার পণ্য রফতানি হয়েছিলো ৫ হাজার ৯৪৮ মিলিয়ন ডলারের। একই সময় ওভেন গার্মেন্টস পণ্য রফতানি হয়েছে ৫ হাজার ৯৮৩ মিলিয়ন ডলারের।
বিজিএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী, অর্থনীতির ৭০ ভাগই এ পোশাকশিল্পে জড়িত। দেশের রফতানির ৭৮ শতাংশই আয় হয় এ শিল্প থেকে। মোট জিডিপির ১০ শতাংশের বেশি আসে পোশাকশিল্প খাত থেকে। দেশের প্রায় ৪০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে পোশাকশিল্প কারখানাগুলোতে।
তাই এই শিল্প বাঁচানোর উদ্যোগ না নিলে পোশাক শিল্পে ধস নামার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Source: http://www.banglanews24.com/
Date: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
Related All Post:
গার্মেন্টস স্টকলট ব্যবসা : একটি লাভজনক বিনিয়োগ
বঙ্গবাজারে স্টক লটে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আধিপত্য
Some Bangladeshi Garments Website: