Monday, November 11, 2013

পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আধুনিকায়ন চাই

পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আধুনিকায়ন চাই
সিপিডি'র 'নীতি সংলাপ'


 স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা অফিস:
দেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সমসাময়িক বিশ্ব বাজারের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ খাতের আধুনিকায়নের পরামর্শ দিয়েছেন উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিডিপি) আয়োজিত এক 'নীতি সংলাপ' অনুষ্ঠানে বক্তারা এই পরামর্শ দেন। রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে আয়োজিত 'চ্যালেঞ্জ অব ইকোনোমিক ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড গ্রোথ : ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড এগ্রিকালচার' শীর্ষক এই সংলাপের প্রথম পর্বে পোশাক খাত এবং দ্বিতীয় পর্বে কৃষি খাত নিয়ে আলোচনা হয়। প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন খান। সিপিডির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে বক্তারা বিশ্ব বাজারের চাহিদা পূরণ করতে পোশাক খাতের শ্রমিকের মান উন্নয়ন ও স্বার্থরক্ষার পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। এক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব শিল্প মালিকদের বললেও সরকার নীতি সহায়তা দিতে প্রস্তুত বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল। তিনি বলেন, পোশাক শিল্পে প্রযুক্তি ও অবকাঠামোর উন্নয়ন দরকার। সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সনাক্ত করে তা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে।
পোশাক শিল্প কম দামের পোশাকের, না বেশি বেশি দামের পোশাকের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করবে তা শিল্প মালিকদের ঠিক করতে হবে।
সরকার প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দিতে প্রস্তুত। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পুনরায় পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী তোফায়েল বলেন, যদি রাজনীতি সম্পৃক্ত না হয়, তা হলে আগামী শুনানিতেই জিএসপি ফেরত পাব বলে আশা করছি। পোশাকি শিল্পে শ্রম পরিবেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া ১৬টি শর্তের মধ্যে ২ থেকে ৩টি বাদে সব পূরণ হয়েছে দাবি করে এই আশার কথা জানান তিনি। সাবেক মন্ত্রী মঈন খান পোশাক শিল্পে কর্মপরিবেশ উন্নয়নে সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে উদ্যোক্তাদের নিজেদের উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান। তবে আলোচনায় বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম এক্ষেত্রে সরকারি ভূমিকার ওপরই বেশি জোর দিয়েছেন।
পোশাক শিল্পের প্রযুক্তি উন্নয়নে বাংলাদেশে সরকারি কোনো ফান্ড নেই। কিন্তু প্রতিযোগী দেশ ভারত, চীনসহ অন্যান্য দেশে তা রয়েছে। আগামীতে পোশাক শিল্পের জন্য সবুজ পরিবেশ ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।
বিজিএমইএ থেকে এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, আমরা আশা করছি সরকার এগিয়ে আসবে। পোশাক শিল্প মালিকদের প্রধান সংগঠনটির সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজও বলেন, সরকারের উচিত ভাবমূর্তি ও শ্রমিক উন্নয়নে উদ্যোগ নেয়া। বিকেএমইএ'র সাবেক সহসভাপতি বাসেদ রহমান পোশাক শিল্পের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের আহ্বান জানান। সিপিডির গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম পোশাক শিল্পকে টেকসই করতে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দেন। নতুন প্রযুক্তি, নতুন বিনিয়োগ, শ্রম ও পণ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। শ্রমিক ও উদ্যোগ উভয় পর্যায়ে ট্রেনিং দরকার আছে।
একই মত জানিয়ে ট্যারিফ কমিশনের প্রধান আবিদুর রহমান পোশাক শিল্পে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে পোশাক শিল্পের ওপর গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাচুরিটিজের নিখিল ত্রিবুহুন, আজম মোহাম্মদ, চ্যারিস উডরুফ আলাদা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

No comments:

Post a Comment