Monday, November 11, 2013

পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আধুনিকায়ন চাই

পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আধুনিকায়ন চাই
সিপিডি'র 'নীতি সংলাপ'


 স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা অফিস:
দেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সমসাময়িক বিশ্ব বাজারের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ খাতের আধুনিকায়নের পরামর্শ দিয়েছেন উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিডিপি) আয়োজিত এক 'নীতি সংলাপ' অনুষ্ঠানে বক্তারা এই পরামর্শ দেন। রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে আয়োজিত 'চ্যালেঞ্জ অব ইকোনোমিক ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড গ্রোথ : ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড এগ্রিকালচার' শীর্ষক এই সংলাপের প্রথম পর্বে পোশাক খাত এবং দ্বিতীয় পর্বে কৃষি খাত নিয়ে আলোচনা হয়। প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন খান। সিপিডির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে বক্তারা বিশ্ব বাজারের চাহিদা পূরণ করতে পোশাক খাতের শ্রমিকের মান উন্নয়ন ও স্বার্থরক্ষার পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। এক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব শিল্প মালিকদের বললেও সরকার নীতি সহায়তা দিতে প্রস্তুত বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল। তিনি বলেন, পোশাক শিল্পে প্রযুক্তি ও অবকাঠামোর উন্নয়ন দরকার। সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সনাক্ত করে তা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে।
পোশাক শিল্প কম দামের পোশাকের, না বেশি বেশি দামের পোশাকের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করবে তা শিল্প মালিকদের ঠিক করতে হবে।
সরকার প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দিতে প্রস্তুত। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পুনরায় পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী তোফায়েল বলেন, যদি রাজনীতি সম্পৃক্ত না হয়, তা হলে আগামী শুনানিতেই জিএসপি ফেরত পাব বলে আশা করছি। পোশাকি শিল্পে শ্রম পরিবেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া ১৬টি শর্তের মধ্যে ২ থেকে ৩টি বাদে সব পূরণ হয়েছে দাবি করে এই আশার কথা জানান তিনি। সাবেক মন্ত্রী মঈন খান পোশাক শিল্পে কর্মপরিবেশ উন্নয়নে সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে উদ্যোক্তাদের নিজেদের উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান। তবে আলোচনায় বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম এক্ষেত্রে সরকারি ভূমিকার ওপরই বেশি জোর দিয়েছেন।
পোশাক শিল্পের প্রযুক্তি উন্নয়নে বাংলাদেশে সরকারি কোনো ফান্ড নেই। কিন্তু প্রতিযোগী দেশ ভারত, চীনসহ অন্যান্য দেশে তা রয়েছে। আগামীতে পোশাক শিল্পের জন্য সবুজ পরিবেশ ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।
বিজিএমইএ থেকে এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, আমরা আশা করছি সরকার এগিয়ে আসবে। পোশাক শিল্প মালিকদের প্রধান সংগঠনটির সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজও বলেন, সরকারের উচিত ভাবমূর্তি ও শ্রমিক উন্নয়নে উদ্যোগ নেয়া। বিকেএমইএ'র সাবেক সহসভাপতি বাসেদ রহমান পোশাক শিল্পের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের আহ্বান জানান। সিপিডির গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম পোশাক শিল্পকে টেকসই করতে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দেন। নতুন প্রযুক্তি, নতুন বিনিয়োগ, শ্রম ও পণ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। শ্রমিক ও উদ্যোগ উভয় পর্যায়ে ট্রেনিং দরকার আছে।
একই মত জানিয়ে ট্যারিফ কমিশনের প্রধান আবিদুর রহমান পোশাক শিল্পে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে পোশাক শিল্পের ওপর গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাচুরিটিজের নিখিল ত্রিবুহুন, আজম মোহাম্মদ, চ্যারিস উডরুফ আলাদা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

Thursday, October 10, 2013

তৈরি পোশাকের বড় রপ্তানির হাতছানি

তৈরি পোশাকের বড় রপ্তানির হাতছানি

- মনজুর আহমেদ


রানা প্লাজা ধসের পর বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের পোশাক খাত নিয়ে যে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল, তা খানিকটা স্তিমিত হয়ে এসেছে। এখন বড় এক সম্ভাবনার হাতছানি এসেছে এ শিল্পের জন্য।

সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন দিক থেকে। পোশাকশিল্পের ভবন সংস্কারে ক্রেতারা বড় অঙ্কের বাজেট করেছেন ও করছেন। এই বাজেটের অর্থ দিয়ে ত্রুটিমুক্ত করা হবে কারখানা ভবন। শ্রমিকদের দেওয়া হবে নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার বিষয়ে নানা প্রশিক্ষণ। অগ্নিদুর্ঘটনা কমিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কতটা কমানো যায়, সে জন্যও শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে আধুনিক যন্ত্রপাতিতেও সজ্জিত করা হবে কারখানা।
ক্রেতারা তাদের শর্ত পরিপালন বিষয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি তৎপর হয়েছে। বছর ধরে ধরে তারা বাংলাদেশের পোশাক খাতের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে চায়। ফলে কর্মপরিবেশ উন্নত না করে কোনো ‘ব্র্যান্ডে’র কাজ করা আর সম্ভব হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়েই দেশের পোশাক খাত আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন শিল্পমালিকেরা।
তাজরীন ফ্যাশনসের পর স্মার্ট ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড, তারপর রানা প্লাজা ধসে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের পাশাপাশি ক্রেতারাও তীব্র সমালোচনায় পড়ে। কিন্তু ক্রেতারাই বাংলাদেশের পোশাক খাতের ইতিবাচক দিক তুলে ধরছে। এ ক্ষেত্রে আমেরিকা, ইউরোপ উভয় অঞ্চলের ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানই এখন তাদের পোশাক তৈরি করে নেওয়ার দেশ হিসেবে বাংলাদেশকেই গন্তব্য মনে করছে। শিল্পমালিকেরা বলছেন, বাংলাদেশের মতো এত বড় শিল্পক্ষেত্র বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই। অন্য কোনো দেশই প্রস্তুত নয় পোশাকের বাজার ধরতে। সস্তা শ্রম, ঘনবসতি, ধৈর্য ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে কাজ করে যেতে চায় না কোনো দেশেরই বিপুলসংখ্যক বিশেষত নারী শ্রমিক। সেখানেই বাংলাদেশের সম্ভাবনা।
সম্ভাবনা যেভাবে: মাঝখানে বাংলাদেশ থেকে বেশ কিছু রপ্তানির কাজ ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে চলে যাচ্ছিল। ভারতও কিছুটা তৈরি হতে শুরু করেছিল। কিন্তু বিপুল দরিদ্র জনগোষ্ঠী, সস্তা শ্রম, শ্রমিকের সক্ষমতা, অভিজ্ঞতা, শিল্পের বিরাট স্থাপনা ও স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে পাওয়া শুল্কসুবিধা এগিয়ে নিয়েছে এ দেশকে।
রানা প্লাজা ধসের পর আমেরিকাতে ভোক্তারা এ দেশের পণ্য বর্জনের অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ তৈরি করেছে ভোক্তা ও শ্রমিক সংঘ। ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলোও এককাট্টা হয়েছে। ‘অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক পাঁচ বছর মেয়াদি কর্মসূচিতে স্বাক্ষর করেছে ৮০টি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলো প্রত্যেকে বছরে পাঁচ লাখ ডলার করে দেবে। ফলে পাঁচ বছরে এদের কাছ থেকে আসবে ২০ কোটি ডলার। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিষয়ে ইউরোপীয় ক্রেতা প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করে গেছে। আরও আছে নর্থ আমেরিকান অ্যালায়েন্স নামে উত্তর আমেরিকার ১৫ ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান, ইউরোপ ও আইএলওর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সমঝোতা চুক্তি ‘কমপ্যাক্ট’। আছে আমেরিকায় জিএসপি বিষয়ে বেশ কিছু পালনীয় শর্ত। এসব শর্ত পালনে ডিএফআইডি, জাইকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নও বড় ধরনের তহবিল তৈরি করেছে ও করছে। বাংলাদেশের শিল্প খাতকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতেই এসব শর্ত ও সহায়তা।
সার্বিক বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম থেকে তাদের চেষ্টা ছিল বিভিন্ন ক্রেতা ও দেশের যে ভিন্ন ভিন্ন শর্ত, তা অভিন্ন শর্তে আনা। আলোচনায় আমরা মতৈক্যে পৌঁছেছি যে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যার মধ্যে আমেরিকাতে জিএসপিও থাকবে, আবার আইএলওর শর্তও পালন হবে।’ তিনি বলেন, সম্ভাবনা তো আছেই, তবে প্রথম দু-এক বছর কিছুটা সমস্যা হতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বড় সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের জন্য।
বড় শিল্পগুলো তৈরি হচ্ছে: এনভয় দেশের পোশাক খাতের পরিচিত ও বড় শিল্পগোষ্ঠী। ময়মনসিংহের ভালুকাতে ৩২ বিঘা জমির ওপর নতুন একতলার কারখানা তৈরি করছে। এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্বখ্যাত ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের কাজ পেতে হলে এখন এমন অনেক শর্ত পালন করতে হবে। একতলার ওপরে ভবন হলে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা কমে আসবে। তিনি বলেন, শিল্পমালিকেরা নিজেদের প্রয়োজনেই ক্রেতাদের এসব শর্ত পালন করবেন। তবে একটা ধাক্কা লাগতে পারে পোশাক খাতে। কিন্তু নতুনেরা এগিয়ে যাবে বলে মত দেন তৈরি পোশাক মালিক সমিতির সাবেক এই সভাপতি।
এনভয়ের মতো ভেতরে ভেতরে দেশের বড় পোশাক কারখানাগুলো একধরনের প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে বলে জানা যায়। এসব শিল্পমালিক মনে করেন, কারখানা পরিবেশ দ্রুত উন্নতির তাগিদ যেমন থাকতে হবে, তেমনি শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়নে তাঁদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা জরুরি। সে ক্ষেত্রে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে হবে বাংলাদেশকে।
ছোট কারখানা বন্ধ হতে পারে: তবে ক্রেতাদের এসব শর্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দেশের ছোট ও মাঝারি পর্যায়ের বেশ কিছু পোশাক কারখানা বন্ধ হতে পারে বলে মনে করছেন মালিক সমিতির নেতারা।
বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, অবকাঠামো ও সব ধরনের শর্ত পালন না করতে পেরে ছোট ও মাঝারি কিছু কারখানা বন্ধ হতে পারে। কিন্তু সার্বিকভাবে পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে হলে ক্রেতাদের এসব শর্ত মানার কোনো বিকল্প নেই।

Sunday, October 6, 2013

মিনি গার্মেন্টস দিয়ে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত আশরাফুল

মিনি গার্মেন্টস দিয়ে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত আশরাফুল

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা : সাদুল্লাপুরে মিনি গার্মেন্টস দিয়ে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে আশরাফুল। সরেজমিনে জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের মরুয়াদহ গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৭) ২০০৪ সালে এইচ,এস,সি পাসের পর লেখাপড়ার পরিসমাপ্তি ঘটান। দীর্ঘদিন বেকার অবস্থায় ঘুরাফেরা করতে থাকে। এদিকে ঢাকায় তার এক আত্মীয় গার্মেন্টসে কাজ করেন। সে আশরাফুলকে ঢাকা থেকে কাপড় কিনে নিয়ে এসে সাদুল¬াপুরে মিনি গার্মেন্টস তৈরী করার উৎসাহ উদ্দীপনা জোগাতে থাকে। তার কথামতো ২০১০ সালে সাদুল্লাপুর বাজারের কাশারী পট্টি সংলগ্ন একটি ঘর ভাড়া নিয়ে শুরু করে দেয় মিনি গার্মেন্টস। ঢাকার ইসলামপুর থেকে বিভিন্ন ধরনের রুল কাপড়, শার্ট তৈরীর পেষ্টিং বোর্ড, সাপেস্টার ক্লিপ, পিন চিপস বোতামসহ যাবতীয় সরঞ্জামাদি কিনে নিয়ে এসে এ গার্মেন্টসে পোশাক তৈরী করে কয়েক বছরের মধ্যে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। এদিকে তার মালামাল জেলাসহ নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুরের পীরগাছা, কাউনিয়া, পীরগঞ্জ, শঠিবাড়ী ও মিঠাপুকুরসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সেল্স ম্যানরা সরবরাহ করে আসছে। বর্তমানে মাসে ৩৫০০ পিস শার্ট বাজারে সরবরাহ  করছে। বর্তমানে বাজারের চাহিদা ৬০০০ পিস শার্ট কিন্তু সে অনুযায়ী মালামাল দেয়া তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। কারণ ঘরের পরিধি ছোট এবং আর্থিক কিছুটা অসংগতির কারণে দামী সেলাই মেশিনের অভাবে মাল উৎপাদনে ব্যাহত হচ্ছে। দর্জির কাজে পাওয়ার মেশিন, ঝিকঝাক মেশিন, ফিড অবদা মেশিন যদি এ গার্মেন্টসে থাকতো তাহলে আরও উন্নত মানের রেডিমেট পোশাক তৈরী করে আরও ব্যাপক সাড়া ফেলাতে পারতো। বর্তমানে তার গার্মেন্টসে কর্মচারী ৯ জন। তারা প্রতিদিন ৪/৫ শত টাকা জনপ্রতি আয় করছে। আর সেল্স ম্যানরা কমিশনের ভিত্তিতে ৮ থেকে ৯শত টাকা পর্যন্ত দিনে আয় করছে।
এই গার্মেন্টসের মালিক আশরাফুল মাসে সব খরচ বাদে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করে থাকে। এই গার্মেন্টসের মালিক আশরাফুল বলেন, সরকারি কিংবা বে-সরকারি সংস্থা এ মিনি গার্মেন্টসের দিকে আর্থিকভাবে একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালে উন্নত মেশিনের মাধ্যমে কাজের ক্ষেত্র তৈরী করে ৭০/৮০ জন বেকার যুব ছেলে-মেয়েদের নিজ এলাকায় আত্মকর্মসংস্থানের পথ সুগম হতো। তাদেরকে আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে ঢাকায় গিয়ে কাজ করতে হবে না।


Thursday, August 22, 2013

পোশাকখাতে বিপর্যয় এলে অর্থনীতি দেউলিয়া হবে : আনিসুল হক

পোশাকখাতে বিপর্যয় এলে অর্থনীতি দেউলিয়া হবে : আনিসুল হক

যাযাদি রিপোর্ট সার্ক চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আনিসুল হক বলেছেন, গার্মেন্টস শিল্পে কঠিন সময় আসলে দেশের অর্থনীতি দেউলিয়া হয়ে যাবে। এ বিপর্যয় কোনো সাধারণ অর্থনীতির হিসেবে বিষয় নয়। এর কোনো তাৎৰণিক সমাধান পাওয়া যাবে না। কেননা এ শিল্পের সঙ্গে ৪০ লাখ শ্রমিক জড়িত। যার ৯০ শতাংশই নারী। বৃহৎ এ খাতের জন্য সরকারের যা যা করণীয় তা করা উচিত।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু আনত্দর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) ৪ দিনব্যাপী মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, পোশাকখাতের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ (এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং) শিল্পের জন্য প্রণোদনা সহায়তা ও ব্যাংক গ্যারান্টির বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। পোশাকখাতকে দেশের সবচেয়ে বড় এবং সফল শিল্প হিসেবে উলেস্নখ করে তিনি বলেন, তুলাসহ অনেক কাঁচামাল আমরা উৎপাদন করি না, তারপরও বিভিন্ন উৎস থেকে আমদানি ও সমাহারের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা ফাইনাল প্রডাক্ট তৈরি করেন। এজন্য উদ্যোক্তা এবং শ্রমিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন মন্ত্রী। 
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- এশিয়ান প্যাকেজিং ফেডারেশনের সভাপতি সফিউলস্নাহ চৌধুরী, বিজিএমইএর সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন এবং বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রমুখ। বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রাফেজ আলম চৌধুরী। 
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ঐতিহাসিক ও ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ পোশাক শিল্পের দেশ। অনেক উদ্যোক্তা এখন এ শিল্পের সঙ্গে সংশিস্নষ্ট। শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিল্প এক সময় শ্রমিক নিপীড়নের উৎস ছিল, এখন উন্নয়নের সোপান। সাম্প্রতিক বছরে শ্রমিকের বেতন প্রায় দ্বিগুন করা হয়েছে। এজন্য সরকারের চাইতে উদ্যোক্তাদের অবদানই বড়। 
অনষ্ঠানে সার্ক চেম্বার সভাপতি আনিসুল হক বলেন, পোশাক রপ্তানির শুরম্নর দিকে একটা সাধারণ কার্টনও আমদানি করতে হতো, সময় লাগত চার মাস। এখন দেশে এসব কার্টন ও এক্সসরিজ তৈরি হচ্ছে; সকালে অর্ডার দিলে বিকালে সরবরাহ করতে পারছেন উদ্যোক্তারা। তবে এখাতে দৰতা ও প্রতিষ্ঠানিক শিৰার ওপর গুরম্নত্ব দেন তিনি।
সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকার বিদ্যুৎখাত উন্নয়নে সফল, তবে গ্যাস উন্নয়নে গত দুই বছরে কিছুই হয়নি। পোশাকখাতের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের সম্ভাবনা বিশাল কিন্তু অবকাঠামো এবং উচ্চহারের ব্যাংক সুদ বড় বাধা। তিনি বলেন, ১৮ থেকে ২০ শতাংশ সুদ দিয়ে কোনো শিল্প চলতে পারে না। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের চার লেনের কাজ কেবল শুরম্ন হয়েছে, অথচ এখন ছয় লেনের প্রয়োজন। এসব বিষয়ে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে বলে মনত্দব্য করেন তিনি। অর্থনীতির স্বার্থে সার উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখে তা শিল্প কারখানায় সরবরাহ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মো. হাতেম। প্যাকেজিং টেকনোলজিতে অদৰতা রয়েছে এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিৰার জন্য উপযুক্ত ইন্সটিটিউট গড়ে তোলার কথা বলেন তিনি।
সভাপতির বক্তৃতায় রাফেজ আলম চৌধুরী বলেন, গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং পণ্য রপ্তানি করে গত অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে। সরকারের নীতিগত সমর্থন পেলে আগামী ৫ বছরে মধ্যে এ খাত থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করা সম্ভব।
Source: http://www.jjdin.com/



Some Bangladeshi Garments Website:



Wednesday, August 21, 2013

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে বিজিএমইএ: শহীদুল্লাহ আজিম

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে বিজিএমইএ: শহীদুল্লাহ আজিম


পোশাক কারখানায় শ্রমিক নিরাপত্তার পাশাপাশি যন্ত্রপাতি, উপকরণ ও বিনিয়োগের নিরাপত্তার প্রশ্নটি গভীরভাবে সম্পৃক্ত। সার্বিক অর্থে, বলতে গেলে- এখন আসল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে তৈরি পোশাক শিল্পখাতে সাড়ে তিন দশকের বিনিয়োগের নিরাপত্তায় পরিকল্পিত শিল্প অবকাঠামো গড়ে তোলা।
আর এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পোশাক রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে বলে জানান সংগঠনটির সহ-সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আজিম।
সম্প্রতি রাইজিংবিডিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন। ক্ল্যাসিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল্লাহ আজিমের সঙ্গে কথা বলেন রাইজিংবিডির  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক নিয়াজ মাহমুদ সোহেল।


প্রশ্ন: রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর পোশাক শিল্পের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো কী? এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিজিএমইএ কতটা প্রস্তুত?

উত্তর: ব্যবসা মানেই শুধুমাত্র মুনাফা নয়; জীবনের মানোন্নয়ন ও মানবিকতাবোধের চর্চারও ক্ষেত্র। ঘটনা দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হয়। রানা প্লাজা ধসের ঘটনা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, কোন কোন শিল্পমালিক, জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা, মুনাফালোভী প্রতিষ্ঠান কিংবা পর্যবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অবৈধ ও অনৈতিক তৎপরতায় জড়িত ছিল। বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের তদন্ত প্রতিবেদনেও একই তথ্য এসেছে। এ ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত হলে দুর্ঘটনা ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ থেকে শিল্প কারখানাগুলোকে রক্ষা করা সম্ভব হবে, ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনাও এড়ানো যাবে।


প্রশ্ন: রয়টার্সের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দামের কারণেই বিদেশী ক্রেতারা বাংলাদেশের পোশাক থেকে মুখ ফেরাবেন না-  আপনার অভিমত কী?

উত্তর: প্রতিবেদনটি যথার্থ। পোশাক শিল্পের বিশ্ববাজার বাস্তবতায় আমাদের এই  শিল্পটির জন্য রয়েছে সম্ভাবনার বার্তা। সাড়ে তিন দশকে তিলে তিলে গড়ে ওঠা বাংলাদেশী পোশাকের সস্তা বাজারটি এখনই হাতছাড়া করতে পারবেন না বিশ্ব ক্রেতারা। বিকল্প বাজার তৈরির জন্য অপেক্ষার প্রয়োজন আছে। আর এই সময়টাই বাংলাদেশের পোশাকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মনে করি এই অন্তর্বর্তী সময়টাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে।  


প্রশ্ন: এই সময়টিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়?  এ বিষয়ে বলুন?

উত্তর: এই সময়টি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ‘সঙ্কট’ ও ‘সম্ভাবনা’ এই দু’বিবেচনাতেই বর্তমান সময়টি গুরুত্বপূর্ণ। রানা প্লাজার ধস, এটি দুর্ঘটনা বা হত্যাকা-, যাইহোক- মানুষের নিরাপত্তাহীনতা ও সঙ্কটের অমানবিক দৃশ্যপট   বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল। আর সম্ভাবনা এটাই যে এতবড় দুর্ঘটনার পরও ক্রেতারা বাংলাদেশকে ছাড়তে পারছে না। সুতরাং রাতারাতি কারখানাগুলি বন্ধ হয়ে যাবে; ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের কারণে একের পর এক দুঃসংবাদ ছড়াবে তা নয় বরং উক্ত প্র্রতিবেদনটিতে স্পষ্ট হয়েছে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অবস্থান আর অবদান একদিনের নয়।  


প্রশ্ন: নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিতিশীলতা পোশাক শিল্পের বিকাশ ও সুরক্ষার পথে প্রধান অন্তরায়। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ কী ?

উত্তর: সাম্প্রতিক ডিজাস্টার থেকে আমরা যথেষ্ট সচেতন হয়েছি। ইতোমধ্যে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বিবেচনায় অনেকগুলো কারখানা বন্ধ হয়েছে। সুতরাং নিরাপত্তাহীনতার প্রতিরোধক এসব পদক্ষেপগুলো ক্রেতারা পর্যবেক্ষণ করছেন গভীরভাবে; এটা ভালো লক্ষণ। আগে অগ্নি-দুর্ঘটনা বেশি হতো। এরপরে অগ্নি-প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে শিল্প কারখানাগুলোতে। এতে পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। ১৯৮৪ সালে সংঘটিত ভারতের ভোপালে অবস্থিত ইউনিয়ন কার্বাইডের পেস্টিসাইড প্লান্টের (ইউসিপিএল) বিস্ফোরণে ৫ সহস্রাধিক মানুষ নিহত এবং সমসংখ্যক বা তারও বেশি মানুষ পঙ্গু-বিকল্পাঙ্গ হয়েছিলেন। আর ১৯৯১ সালে নিউইয়ার্কের ট্রাঙ্গেল শার্টওয়াস্ট প্লান্টে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত হয়েছিল সহস্রাধিক শ্রমিক। এসবই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা।  সার্বিকভাবে বলতে গেলে এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে তৈরি পোশাক শিল্পখাতে সাড়ে তিন দশকের বিনিয়োগের নিরাপত্তায় পরিকল্পিত শিল্প অবকাঠামো গড়ে তোলা।  

প্রশ্ন: বাংলাদেশের বাজারের প্রতি বিদেশী ক্রেতাদের আগ্রহী করে তোলার  আর কী  সুযোগ বাকী রয়েছে ?

উত্তর: অনেক সুযোগ আমাদের আছে। ভারত, চীন ও ভিয়েতনামের মতো প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে আমরা বহু বিবেচনায় এগিয়ে আছি। এই খাতের সঙ্গে আমরা যারা জড়িত- উপলব্ধি করছি, শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতার কারণে আমরা বেশি আশাবাদী। এদেশের শ্রমিকদের কর্মদ্যোগ, ও দক্ষতা অন্যদেশের চেয়ে বেশি। সুতরাং  উৎপাদনশীলতা বেশি হওয়ায় প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে আমরা দ্রুত এগিয়ে গেছি এবং বিশ্বের শীর্ষস্থান দখলে নেওয়ার ক্ষেত্রেও আশাবাদী। সুতরাং পোশাক শিল্পের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের আজকের অবস্থান ও অবদান হেলাফেলার চোখে দেখতে পারছেন না ক্রেতাগোষ্ঠী।

রানা প্লাজা ধসের পর আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী থেকে তৈরি পোশাক শিল্পখাত উন্নয়নে পরামর্শ ও সহযোগিতার যে হাত প্রসারিত হচ্ছে এসব কিছু আমাদের বলে দেয় যে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পখাতের ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে যায়নি। রয়টার্স-এর প্রতিবেদনটির সারমর্ম আমাদের যথার্থভাবে উপলব্ধি করতে হবে। ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে, বাজার হারানো শঙ্কা রয়েছে কিন্তু সম্ভাবনা ও সমৃদ্ধি লাভের বার্তাও ছড়িয়েছে সেই প্রতিবেদনে।

প্রশ্ন: আপনি বলছেন, উৎপাদশীলতায় বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। পোশাক শিল্পের স্থানীয়করণ  নীতি অনুসৃত হওয়া আবশ্যক ছিল। এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হচ্ছে  না কেন?

উত্তর: এটা সত্য যে- দীর্ঘসময় লেগে যাচ্ছে শিল্পের স্থানীয়করণ হতে। সাড়ে তিন দশক সময় কম নয়; বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, জাতীয় অর্থনীতি, বৈদেশিক মুনাফা অর্জন এসব বিবেচনায় শ্রমঘন তৈরি পোশাক শিল্পখাত অসামান্য অবদান রেখেছে। সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সব পক্ষ মিলে দ্রুত যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পোশাক শিল্প কারখানাগুলোকে বিশেষ শিল্প অঞ্চলে স্থানান্তর করা জরুরি। একই শিল্প জোনে অবস্থিত শত শত কারখানায় অভিন্ন উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা; শ্রমিকের জীবনমান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও সহায়ক। সর্বোপরি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, নিরাপত্তা দেওয়া এবং তদারকি পর্যবেক্ষণ করাও সম্ভব সহজসাধ্য। পরিকল্পিত নিরাপদ শিল্প অবকাঠামোয় স্থানান্তরের প্রক্রিয়ায় আমরা তৈরি পোশাক শিল্পখাতের সক্ষমতা বাড়িয়ে নিতে পারি এবং ক্রেতাদের আগ্রহ ধরে রাখতে পারি। এ কাজটি করার এখনই উপযুক্ত সময়।

প্রশ্ন: রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াতে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বেশি সড়ক নির্মাণের ফলে নদীপথ  বিপন্ন হচ্ছে। বাড়ছে পরিবহন ব্যয়। এভাবে শিল্পায়নের অগ্রগতি কতটুকু সম্ভব?

উত্তর: বাংলাদেশ অমিত ও অফুরান সম্ভাবনার দেশ। বিশাল সমুদ্র উপত্যকা, চট্টগ্রাম বন্দর এবং জালের মতো ছড়িয়ে থাকা নদীগুলোই আমাদের কৃষি ও শিল্পের প্রাণ। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে সড়ক অবকাঠামো নির্মাণের ফলে  নদী প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে। পণ্য পরিবহনের সুলভ নেটওয়ার্ক নদীপথ ধ্বংস হলে শুধু গার্মেন্টস সেক্টর নয়, সব শিল্পখাত ও কৃষিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ইতিমধ্যে নদীপথ ও রেলপথ ছেড়ে এখন আমরা পুরোপুরি সড়ক অবকাঠামো নির্ভর হয়ে পড়েছি। এর ফলে রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ ভোগ্যপণ্যের মূল্য বহুগুণ বেড়েছে। সস্তা শ্রমের মতো সুলভ পরিবহন ব্যয়ও রপ্তানির অন্যতম প্রভাবক সুতরাং যে করেই হোক নদীপথ সংস্কার এবং রেলওয়ে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের মধ্যদিয়ে শিল্প বিকাশের পথে এগিয়ে যাওয়া উচিত।   

প্রশ্ন: চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী চার দশকেও কার্যকর হয়নি।  এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কি?

উত্তর: ভৌগোলিক অবস্থান, ও বিশাল সাগর উপত্যকা চট্টগ্রামকে সমৃদ্ধ করেছে। চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী করার দাবি দীর্ঘদিনের। এই কাজটি করে আমরা জাতীয় অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে বহুমাত্রায় বাড়িয়ে নিতে পারি। পর্যটন শিল্পের বিবেচনায়ও কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম অধিক গুরুত্ব পাওয়ার দাবি রাখে। শিল্পখাত বর্তমানে যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে এ সময়ে যদি আমরা নৌপথ ও রেলপথে পণ্য পরিবহনের সুলভ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারি তাহলে শিল্পায়ন ও রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে সমৃদ্ধ অর্থনীতি গড়ে তোলা সম্ভব।







Tuesday, June 25, 2013

ক্ষুদ্র গার্মেন্টস’র ঈদ বাজার: সৈয়দপুরে প্রতিদিন দেড় কোটি টাকার বেচাকেনা

ক্ষুদ্র গার্মেন্টস’র ঈদ বাজার: সৈয়দপুরে প্রতিদিন দেড় কোটি টাকার বেচাকেনা


শাহজাহান আলী, সিসিনিউজ: শেষ মূহুর্তে জমজমাট হয়ে উঠেছে বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরের ঈদ পোশাকের বাজার। সে কারণে সরগরম স্থানীয় ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানাগুলো। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে হাল ফ্যাশনের বাহারী পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। খুচরা  পাইকারী মিলিয়ে ঈদ বাজারে কারখানাগুলোর প্রতিদিন প্রায় দেড় কোটি টাকার বেচাকেনা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
ঢাকা-চট্টগ্রামের বৃহৎ গার্মেন্টস কারাখানাগুলোর ঝুট কাপড়ের উপর নির্ভর করে সৈয়দপুরে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানা। এসব কারখানায় তৈরী করা হয় বিভিন্ন বয়সী ছেলেদের পোশাক। ঈদকে সামনে রেখে নিত্য নতুন বাহারী ডিজাইনের পোশাকও তৈরী করা হয়। ঈদের মার্কেট ধরতে হাল ক্রেজের পোশাকের সমাবেশ ঘটানো হয়। সারা দেশেই গার্মেন্টসের পোশাকের চাহিদা রয়েছে। রমজানের শুরুতে পাইকাররা বিপুল পরিমান পোশাক সংগ্রহ করেন। এছাড়া সৈয়দপুরেই রয়েছে খুচরা বিক্রির বিশাল বাজার। এই ঈদে এখানকার ক্ষুদ্র পোশাক কারখানাগুলোতে তৈরী গ্যাভাডিন কাপড়ের মোবাইল প্যান্ট, জিন্স প্যান্ট, মোবাইল শার্ট শর্ট প্যান্ট এবং লিলেন কাপড়ের শর্ট ধুতি বিক্রি হচ্ছে ব্যাপকহারে। এর সাথে ঘর সাজানোর জন্য বালিশের কভার, দরজা-জানালার পর্দা, বিছানার চাদর ছেলে শিশুদের পোশাক বিক্রি চলছে সমান তালে। বিভিন্ন ব্রান্ডের প্যান্ট ন্যুনতম ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০০ টাকা, শার্ট ৩০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা দামে বিক্রি হয়। শহরের ছাট কাপড়ের মার্কেট খ্যাত সামসুল হক রোডের ক্ষুদ্র গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা জানান, খুচরা পর্যায়ে বেচাবিক্রি ভালো, তবে ব্যবসায়ীরা একবারে বেশি অর্ডার দিচ্ছেন না। আগে এমনটি দেখা যায়নি। এবার ঈদে তারা হাল ফ্যাশনের পোশাক তৈরী করেছেন। ঈদের বাজারে দৈনিক তাদের দেড় কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে বলে তারা জানান।


Source: http://ccnews24.com/



মালয়েশিয়ায় বাণিজ্য মেলায় অংশ নিয়েছে সৈয়দপুরের ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক গ্রুপ


স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী।। প্যাভিলিয়ন নিয়ে মালয়েশিয়ার বাণিজ্য মেলায় অংশ নিয়েছে রফতানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক গ্রম্নপ নীলফামারীর সৈয়দপুরের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান দুলু। মঙ্গলবার ( ২৬ নবেম্বর) থেকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ৩দিন ব্যাপী ওই মেলা শুরু হয়। মেলায় নীলফামারীর সৈয়দপুরের রফতানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক গ্রুপের প্যাভিলিয়ন ব্যাপক প্রশংসিত লাভ করে।

ওই মেলায় মতিয়ার রহমানের প্যাভিলিয়নে সৈয়দপুরের উৎপাদিত ট্রাউজার, জ্যাকেট, শটস শার্ট, টি-শার্ট ইত্যাদি প্রদর্শন করা হয়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত ওই বাণিজ্য মেলায় সৈয়দপুরের গার্মেন্টস খাত আমন্ত্রণ পেয়েছে। আর রফতানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক গ্রম্নপের পক্ষ থেকে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এতে প্যাভিলিয়ন নিয়ে অংশ নেন।
ইপিবি সূত্র জানায়, সম্পূর্ণ অপ্রচলিত উৎপাদন তথা ঝুট কাপড় দিয়ে তৈরি সৈয়দপুরের তৈরি (গার্মেন্টস) খাত সম্ভাবনা জাগিয়েছে। এখানে ঝুট কাপড়ে তৈরি গার্মেন্টস ভারত, নেপাল ও ভুটানে রফতানি হচ্ছে। ওই শিল্পের আরও প্রসার ঘটাতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রফতানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক গ্রম্নপ, ইনট্রেড মালয়েশিয়ায় আমন্ত্রণ পায়।


Related All Post: